ডিজিটাল ডেস্ক ৭ জুনঃ ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বাংলায় এই কথাটি ভীষণভাবে প্রযোজ্য। এখানে নানান ধর্ম মতে বিশ্বাসী মানুষের রোজ একসাথে তাদের জীবনযাত্রা অতিবাহিত হয়। তবে এই বাংলা সাক্ষীও থেকছে সময়ে সময়ে ধর্মীয় দাঙ্গার। তাস্বতেও আজও ইদ পালনে যেমন শিমুই বিলি হয়, তেমনি দুর্গা পুজোয় আসে মায়ের ভোগ। তবে বর্তমান সময়ে দাড়িয়ে বারংবার ধর্মীয় ধজা উড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলে তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছে কিছু মানুষ কিছু রাজনৈতিক দল। ঠিক এই আবাহে দাড়িয়ে বেশ প্রাসঙ্গিকতা আদায় করেছে দিঘার মন্দিরের জগন্নাথদেবের প্রসাদ। সেই প্রসাদ বিতরণ নিয়ে এখন বঙ্গ রাজনীতি তুঙ্গে। দিঘার মন্দির থেকেই জগন্নাথদেবের প্রসাদ পৌঁছে যাবে বাংলার ঘরে ঘরে। সমস্ত ধর্মের, বর্ণের, জাতির মানুষ পাবেন এই মহাপ্রসাদ। জগন্নাথ দেবকে নিবেদিত খোয়া ক্ষীর মিশবে প্রতিটি প্রসাদে। সঙ্গে থাকবে মন্দিরের ছবি। ১৭জুন থেকেই জেলায় জেলায় বাড়ি বাড়ি এই প্রসাদ পেতে শুরু করবে সাধারণ মানুষ। উল্টোরথের মধ্যেই তা পৌঁছনো শেষ হবে। এদিকে, মহাপ্রসাদ বিতরণ নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই অপপ্রচার শুরু করে দেয় বিরোধী রাজনৈতিক শিবির। বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর গলায় তখনই মহাপ্রসাদ নিয়ে কুৎসার সুর। প্রধানত যেখানে হিন্দুত্বের চাদরে ক্রমশই মুড়ে ফেলতে চাইছে গোটা ভারত সহ বাংলাকে এই বিজেপি। এদিন সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদনে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের গোটা পরিকল্পনার কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। একইসঙ্গে বিরোধীদের অপপ্রচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তোপ দাগেন তিনি(Digha Jagannath Dham)।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, তারাপীঠ থেকে কঙ্কালীতলা, তারকেশ্বর থেকে দক্ষিণশ্বর, নানা মন্দিরে সৌন্দর্যায়নের কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই প্রচেষ্টাকে আড়াল করতেই বিজেপি এখন ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি করছে। জগন্নাথ দেবের প্রসাদ প্রসঙ্গে ইন্দ্রনীলের বক্তব্য, বাংলার বহু মানুষের সাধ থাকলেও সাধ্য নেই জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ গ্রহণ করার। সেই ভাবনা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিন্দু-মুসলমান নয়, প্রতিটি পরিবার এই প্রসাদ পাবে, এটাই সরকারের উদ্দেশ্য। এক কথায়, হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করার যে অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী তুলেছেন তা নস্যাৎ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। ইন্দ্রনীল সাফ জানান, বিজেপি বুঝে গেছে হিন্দুত্বের তাস খেলে বাংলাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবেন না। তাই নানারকম কুৎসা রটানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই প্রসাদ আসলে পশ্চিমবঙ্গের সব বাড়িতে যাবে। রেশন ডিলারদের মাধ্যমে যাবে। প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে যাবে। গোটা বিষয়টি ফুড কোয়ালিটি ইন্সপেক্টররা রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।
এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন,“আসলে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দিঘার জগন্নাথ ধাম ঘিরে বাংলা তথা বাঙালির মধ্যে যে নয়া উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তাতে ভয় পেয়েছে বিজেপি।”খাদ্য দফতরের প্রকল্প ‘দুয়ারে রেশন’-এর মাধ্যমেই এই বাক্সগুলি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে। যাঁরা এই রেশন ব্যবস্থার মধ্যে নেই, তাঁদের বাড়িতে প্রসাদ পৌঁছে দিতে আলাদাভাবে বিতরণের পদ্ধতি আগে থেকেই বিডিওদের ঠিক করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।