ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০এপ্রিল: রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণকে ‘সম্মান’ জানিয়ে দিঘার জগন্নাথধাম পৌঁছলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ দিঘায় জগন্নাথধামের আনুষ্ঠানিক দ্বারোদ্ঘাটন করেছেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেই মন্দিরে পৌঁছেছেন দিলীপ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দ্বারোদ্ঘাটনের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে উপস্থিত হন দিলীপ ঘোষ। চার নম্বর গেট দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন তিনি। মন্দির চত্বরে তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও কুণাল ঘোষ, উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন।
প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রীর এই জগন্নাথধাম কর্মসূচি বয়কট করে বুধবারই কাঁথিতে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য প্রশাসন প্রথমে অনুমতি না দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে কাঁথিতে শুভেন্দু ‘সনাতনী সমাবেশ’ করেছেন। সেই কাঁথি পেরিয়েই দিঘা যান দিলীপ। তবে ‘সনাতনী সমাবেশে’ যাননি।
মঙ্গলবার রাতেই দিলীপ জানিয়েছিলেন যে, বুধবার সময় পেলে তিনি দিঘার জগন্নাথধামে যাবেন। হাওড়ার শ্যামপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও বুধবার তাঁর আমন্ত্রণ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ‘সময় পাওয়া’ দিলীপের পক্ষে কার্যকর হবে কি না, তা দুপুর পর্যন্তও অনিশ্চিত ছিল। শ্যামপুরের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে তিনি বেরোনোর পরই নিশ্চিত হয় যে তাঁর গন্তব্য দিঘা।
রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ অক্ষয় তৃতীয়াকে শুভ দিন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই দিনে পূজার্চনা ও ধর্মীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা রীতি। তাই দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পেয়ে তাঁর উপস্থিতি স্বাভাবিক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগকে তিনি ‘হিন্দু জাগরণে’র প্রয়াস হিসেবে দেখছেন। তিনি জানান, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে হিন্দু জাগরণের বিভিন্ন কর্মসূচি থাকে, এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা এ ধরনের উদ্যোগেরই অংশ। ব্যক্তিগত রসিকতা প্রকাশ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ভগবান আমাদের সঙ্গে দেখা করতে সাড়ে তিনশো কিলোমিটার সফর করেছেন, আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দু’শো কিলোমিটার যেতে পারব না!’’
মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ রাতেই দিঘায় থাকবেন কি না, সে বিষয়ে তখনও সিদ্ধান্ত নেননি। যাঁরা জগন্নাথধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই দিলীপ পৌঁছানোর আগেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তিনি নিজেও বলেন, ‘‘দিঘার পথে যেতে যেতেই দেখছি, অনেকের গাড়িই আমার পাশ দিয়ে কলকাতার দিকে ফিরছে। মুখ্যমন্ত্রী তো হেলিকপ্টারেই ফিরে গিয়েছেন। তাই পৌঁছানোর পর কার কার সঙ্গে দেখা হবে, তা জানা নেই।’’দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘‘মন্দিরে যাওয়া আমার প্রধান উদ্দেশ্য। প্রথমে ভগবানকে প্রণাম করব, তারপর ঠিক করব রাতের পরিকল্পনা।’’