ডিজিটাল ডেস্ক, ১ মে: দিঘার জগন্নাথধামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষের ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেই ছবি ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে দলের একাংশ। পাল্টা দিলীপও আক্রমণ শানিয়েছেন দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতির মাঝেই, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে গিয়ে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোলাঘাটে একটি চা-চক্রে অংশ নেওয়ার কথা ছিল দিলীপ ঘোষের। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সস্ত্রীক তিনি সেখানে পৌঁছেও যান। কিন্তু পৌঁছনোর পরই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দিলীপ ঘোষ চা-চক্রের বিষয়ে জেলা সভাপতি বা দলের অন্য কোনও নেতাকে কিছু জানাননি। একপ্রকার নিজের মতো করেই এলাকায় এসে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। দিলীপ এবং তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে বচসার সময় এক বিক্ষোভকারীকে বারবার বলতে শোনা যায়, “আপনি ভুল করেছেন!”
বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার এগিয়ে এলেও, কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেননি। পরিস্থিতি না সামলানো যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত চা-চক্রে যোগ না দিয়েই ফিরে যেতে হয় দিলীপ ঘোষকে। পরে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ বলেন, “এই দলে ২৫০ জন কর্মীর প্রাণ গিয়েছিল। সেখান থেকে দলকে গড়ে তুলেছিলাম আমরা। আজ সেই দলের এই দশা! দিলীপ ঘোষ পার্টি বদলাতে আসেনি, বাংলার পরিবর্তন আনতেই এসেছে।”
বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে হাজির ছিলেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে একমাত্র তিনিই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকেই দলের অন্দরে তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু হয়। সেই তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। ওই দিন কাঁথিতে ‘সনাতনী সমাবেশ’ আয়োজন করেছিলেন শুভেন্দু, যেখানে না গিয়ে দিলীপ দিঘায় যান। পরে দিলীপের নাম না করেই শুভেন্দু মন্তব্য করেন, “কারও ব্যক্তিগত বিষয়, মন্তব্য, জীবনযাত্রা, কাজের ধরন, প্রেম-ভালবাসা কিংবা রাগ-বিরহ নিয়ে আমি কিছু বলি না, ভবিষ্যতেও বলব না।” উল্লেখযোগ্য, দিলীপ ঘোষের বিয়ের সময়ও শুভেন্দুর গলায় শোনা গিয়েছিল একই রকম মন্তব্যের সুর।
বৃহস্পতিবার সকালেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন দিলীপ ঘোষ। শুভেন্দুর নাম না করে দিঘা থেকেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “বড় বড় কথা বলছেন কারা? যাঁরা মমতার আঁচলের তলায় থেকে নেতা হয়েছেন! চরিত্রের কথা বলছেন কারা? যাঁরা একসময় কালীঘাটের উচ্ছিষ্ট খেয়েছেন, আজ বিজেপির উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে আছেন, তাঁরাই এখন দিলীপ ঘোষকে ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিচ্ছেন।” দিলীপের এই মন্তব্যের লক্ষ্য যে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারী, তা স্পষ্ট বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
Comments are closed.