Dilip Ghosh On 21st July : ২১ জুলাই কোথায় থাকছেন? নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের পরেও জল্পনা জিইয়ে রাখলেন দিলীপ

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ জুলাই : শুক্রবার যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সফরে ছিলেন বাংলায়, ঠিক সেই দিনই দিল্লি রওনা দেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যাওয়ার আগে জানান, তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন।

তবে সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে শুক্রবার কোনও মন্তব্য করতে চাননি দিলীপ। শনিবার তিনি নিজেই ব্যাখ্যা দেন সেই নীরবতার। বলেন, “নড্ডাজির সঙ্গে অনেক গল্প হয়েছে।”

এক ঘণ্টার বৈঠকে শুধুই গল্প? এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপের সোজাসাপটা উত্তর, “বিজেপির প্রেসিডেন্ট যদি আমাকে গল্প করার জন্য ডাকেন, তবে সেটা তো আমাকে করতেই হবে!”

দিলীপ ঘোষ জানান, বৈঠকে সংগঠন সংক্রান্ত নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। তাঁর কথায়, “নড্ডাজি জোর দিয়ে বলেছেন, আরও শক্তভাবে কাজ করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদী) সভায় আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে কোনও ক্ষোভ রয়েছে কি না— এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভেবেছিলাম, আমি গেলে আমাকে কোথায় রাখা হবে, সেটা ঠিক করতে পারছে না, তাই হয়তো ডাকেনি…। প্রথমে ঠিক করেছিলাম যাব না, পরে মাননীয় সর্বভারতীয় সভাপতি (নড্ডাজি) ডাকায় দিল্লি চলে গেলাম।”

বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, আগামী ২১ জুলাই খড়গপুরে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে তৃণমূলের হিংসায় নিহত প্রায় ২৫০ জন বিজেপি কর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। তিনি বলেন, “সব কর্মীরা আসবেন। এই শহিদদের স্মরণ করতেই সভার আয়োজন।”

তবে রাজনৈতিক মহলের নজর কেড়েছে দিলীপ ঘোষের আরেকটি মন্তব্য। কিছুদিন আগেই তিনি দাবি করেছিলেন, ২১ জুলাই কিছু চমক থাকতে পারে। শনিবার সেই প্রসঙ্গে ফের প্রশ্ন করা হলে দিলীপ বলেন, “২১ তারিখ তো এখনও আসেনি। আসুক, তখন দেখা যাবে (Dilip Ghosh On 21st July)।”

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। এর আগে সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার পর জল্পনা তৈরি হয়েছিল, দিলীপ ঘোষকে হয়তো আবার রাজ্য সভাপতির পদে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিলীপকে কোনও বড় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দিলীপের সাম্প্রতিক বৈঠকের পর সেই জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। দলে সাংবিধানিক নিয়মে দায়িত্ব বদল হয়। যদি কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়, তা হলে মাননীয় সভাপতি আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করবেন।”

প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ দীর্ঘদিন আরএসএস-এর প্রচারক হিসেবে কাজ করেছেন। আর এই সময়ে সঙ্ঘ (RSS) ফের রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সর্বভারতীয় বিজেপির নতুন সভাপতি নির্বাচন থেকে শুরু করে রাজ্যস্তরে সংগঠন পুনর্গঠনে সঙ্ঘের প্রভাব স্পষ্ট। এমনকি সঙ্ঘের সমর্থন ছাড়া রাজনীতিতে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া বিজেপি নেতা অসীম ঘোষকে হঠাৎ রাজ্যপাল পদে নিয়োগও অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।

এই প্রেক্ষাপটে সঙ্ঘের হস্তক্ষেপে দিলীপ ঘোষেরও পুনর্বাসনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ের দিলীপের কিছু মন্তব্য ও কাজকর্মে সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব খুব সন্তুষ্ট নয় বলেই শোনা যাচ্ছে।