ডিজিটাল ডেস্ক ৭ই জুলাইঃ আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ কর চাপিয়েছে আমেরিকা। তার জেরে বেশ কিছু রপ্তানিক্ষেত্রে বড়সড় ধাক্কা লাগতে চলেছে বলে মত বিশ্লেষকমহলের। তার মধ্যে অন্যতম হল চর্মজাত দ্রব্য, রাসায়নিক, পোশাক, গয়না এবং চিংড়ি মাছ। বেশ কয়েকটি পণ্য আমেরিকায় রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ শতাংশ কাটছাঁট হতে পারে বলেও অনুমান করা হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন দিল্লিতে এমএস স্বামীনাথন শতবর্ষ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দেন মোদি। সেখানে তিনি বলেন, “কৃষকদের স্বার্থ আমাদের অগ্রাধিকার। ভারত কখনই তার কৃষক, পশুপালক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না। রপ্তানি কমলে তার প্রভাব পড়বে ভারতের অর্থনীতিতে, সেকথা বলাই বাহুল্য(Donald Trump-Narendra Modi)। মোদীর এই বার্তা সরাসরি ওয়াশিংটনের জন্যই বলে মনে করছে বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পাশাপাশি মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল এই শুল্ক চাপানোর ফলে প্রভাব পড়তে চলেছে কৃষি ও পশু পালন সেক্টরও । যার ফলে ভুগতে চলেছে অনেক বানিজ্য এরিয়া।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ ‘শুল্ক বাণ’-এর নেপথ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জারি রাখাকেই দুষেছে হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ফলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেতে চলেছে বস্ত্র রপ্তানি। আমেরিকার বাজারে বস্ত্রের অন্যতম প্রধান জোগানদাতা ভারত। বিভিন্ন প্রকার বস্ত্রের উপর যথাক্রমে ৬৩.৯ শতাংশ এবং ৬০.৩ শতাংশ কর বসবে। ৫৪ শতাংশ শুল্ক চাপবে রাসায়নিকের উপর। ৫০ শতাংশের বেশি শুল্ক গুণবে চিংড়ি, কার্পেট, হিরে, সোনা, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, আসবাবপত্র, তোষক এবং যন্ত্রাংশ। ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নয়া শুল্কনীতি। ফলে সেই সময়ে এই পণ্যগুলি আমেরিকায় রপ্তানির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কাটছাঁট করা হতে পারে বলে মনে করছে বাণিজ্যমহল।
যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাণিজ্যচুক্তিতে আমেরিকার জন্য ভারতীয় কৃষি পণ্যের বাজার পুরোপুরি খুলতে রাজি হয়নি সাউথ ব্লক। ছোট কৃষকদের জীবন-জীবিকা, খাদ্যনিরাপত্তা ও গ্রামীণ অর্থনীতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার, যা একেবারেই ভালোভাবে নেননি ট্রাম্প। এর পরেই নেমে এসেছে ট্যারিফ খাঁড়া। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মোদীর এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে হুঙ্কার দিলেন মোদী। তিনি স্পষ্ট জানালেন, দেশের কৃষক, মৎস্যজীবী, পশুপালকদের স্বার্থের সঙ্গে কোনও আপস করবে না ভারত। মোদীর এই বার্তা সরাসরি ওয়াশিংটনের জন্যই বলে মনে করছে বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বিপুল অঙ্কের শুল্ক দিয়ে আমেরিকায় পণ্য রপ্তানি করতে আগ্রহী নন ব্যবসায়ীদের অনেকেই। তাছাড়া আমেরিকায় রপ্তানি হয়ে যাওয়ার পরেও চড়া শুল্কের কারণে মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে। আমি ব্যক্তিগত ভাবেও জানি যে, এর জন্য আমাকে ভারী মূল্য দিতে হবে। কিন্তু তার জন্য আমি তৈরি। ভারত দেশের কৃষকদের পাশে দাঁড়াবে। তাঁদের ভালোর জন্য আমি সমস্ত ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।