ডিজিটাল ডেস্ক ২৫ অগাস্টঃ সপ্তাহের শুরুর দিনেই একাধিক জায়গায় ইডির হানা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কিনারা করতে ফের পুজোর আগে ‘অ্যাকশন মোডে’ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তেমন সফলতার মুখ দেখেনি ইডি। শুধুমাত্র পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত এই দুর্নীতি মামলায় গারদের পিছনে থাকলেও বাকি সবাই ইতিমধ্যেই জেল মুক্ত(ED Raid)। বারংবারই মুখ থুবড়ে পড়েছে ইডি। যেখানে গোটা শিক্ষা মহলের প্রশ্ন প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে পিছিয়ে গেল এই শিক্ষা দুর্নীতির ফলে তার দায় কে নেবে ? প্রশ্ন এটাও কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এতদিন ধরে কি তদন্ত করল যে এখনও পর্যন্ত সমাধানের রাস্তায় হাটতে পারল না ?
সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের আন্দিতে শোরগোল। কারণ তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। সোমবার সাত সকালে ইডি হানা দেয় তাঁর বাড়িতে। আধিকারিকদের দেখে পালাতে যান বড়ঞার বিধায়ক। গতবারের মতো ফের পুকুরে ছুড়ে দেন মোবাইল। শেষমেশ সেই মোবাইল পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইডির তদন্তকারীরা ঢুকতেই ফের পুকুরে ফের ফোন ফেললেন জীবনকৃষ্ণ। তবে এবারও রেহাই আর পেলেন না। হল না লক্ষ্যভেদ! পুকুর থেকে দু’টি ফোন উদ্ধার করলেন ইডি আধিকারিকরা। এই ফোনগুলিতে কী রয়েছে? কেনই বা তা ফেলে দিতে হল বিধায়ককে? সেটাই এখন যাচাই করবে তারা। পাশাপাশি, জীবনকৃষ্ণের ভবিষ্যৎ ফের কোনও মোড় নেয় কিনা? সেটা এখন দেখার বিষয়।

এমনকি, পুকুরে মোবাইল ফোন ফেলেই যে তিনি ক্ষান্ত হয়েছেন এমন নয়। ইডি হানার আভাস পেয়েই বাড়ির পিছনের দেওয়াল টপকে পালানোরও চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী জাপটে ধরে তাকে। আর পালিয়ে যেতে পারেন না জীবনকৃষ্ণ। এছাড়া বিধায়কের বাড়ির অদূরে মহিষ গ্রামের বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্মী রাজেশ ঘোষের বাড়িতেও হানা দেয় ইডির আরেকটি দল। সোমবার সকালে ইডির অভিযান বীরভূমের সাঁইথিয়াতেও। সেখানকার তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহা সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি। তিনিও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত সন্দেহে তল্লাশি শুরু করেছে ইডি। এছাড়া রাজ্যের আরও দুই জায়গায় চলছে ইডির অভিযান।
২০২৩ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিধায়কের কান্দির বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। টানা চলেছিল চিরুনি-তল্লাশি। আর সেই তল্লাশির ফাঁকে নাটকীয় মোড় টেনে এনেছিলেন বড়ঞার বিধায়ক। ছাদে উঠে নিজের সর্বক্ষণের ব্যবহারের দু’টি মোবাইল ফোন তিনি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন ওই পুকুরেই। এরপর দু’দিন ধরে পাম্প চালিয়ে, কাদা-জল ঘেঁটে দু’টি মোবাইল উদ্ধার করে সিবিআই। অবশ্য, সুপ্রিম নির্দেশে জামিন পাওয়ার পর জীবনকৃষ্ণ সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেছিলেন তিনি এমন কোনও কাজ করেননি।
এদিন জীবনকৃষ্ণের বাড়ি-সহ আরও চার জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। এসএসসি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি মামলায় সাঁইথিয়ায় ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই তৃণমূল কাউন্সিলরও জড়িত। যিনি আবার সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণের পিসি। এছাড়াও, তল্লাশি চালানো হয়েছে মুর্শিদাবাদেরই রঘুনাথগঞ্জে স্থিত জীবনকৃষ্ণের শ্বশুরবাড়িতেও। তল্লাশি চলেছে বড়ঞার এক ব্যাঙ্ক কর্মীর বাড়িতেও। ইডির একটি প্রতিনিধি দল যখন মুর্শিদাবাদে হানা দিয়েছে, ওই সময় আরও একটি দল পৌঁছে যায় পুরুলিয়ায় দুর্নীতি মামলায় জড়িত প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতে।