ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ জুন : ফের গুণমান পরীক্ষায় গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়ল বহু ওষুধে। কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ১৮৮টি ওষুধ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও ইনজেকশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধও। উল্লেখযোগ্যভাবে, কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় ফেল করেছে ২৭টি ওষুধ (Fake Medicine)। এই প্রতিবেদন সামনে আসায় ওষুধের গুণমান ও বাজারে ভুয়ো ওষুধের উপস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারি ও প্রয়োজনে পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর 0524226 এবং k18230707 এই দুটি ব্যাচ নম্বর জাল করে বাজারে ছাড়া হয়েছে ব্লাড প্রেসারের ওষুধ।
ফের গুণমান পরীক্ষায় বিপজ্জনকভাবে পিছিয়ে পড়ল প্রায় ২০০টি ওষুধ। কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল বিভিন্ন ওষুধ। পরীক্ষার রিপোর্টে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র—কিছু ইনজেকশনের ভায়ালে মিলেছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি, কিছু ওষুধ তৈরি হয়েছে অপরিশোধিত জল দিয়ে, আবার কিছু তৈরি হয়েছে নামী সংস্থার নাম নকল করে।
সবচেয়ে বেশি গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রের সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিমাচলের ৪৪টি, উত্তরাখণ্ডের ২৩টি, গুজরাতের ২৩টি, মহারাষ্ট্রের ১৬টি, মধ্যপ্রদেশের ১৩টি এবং পাঞ্জাবের ১২টি সংস্থার ওষুধ পরীক্ষায় ফেল করেছে। এই ঘটনায় ওষুধের গুণমান ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছে বলে জানা যাচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে আবারও রাজ্যে ভেজাল ওষুধের চাঞ্চল্যকর হদিশ মিলেছে। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষায় ইউরিম্যাক্স D নামক একটি নামী বহুজাতিক সংস্থার ওষুধের নির্দিষ্ট ব্যাচকে ভেজাল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্টেট ও কিডনির রোগীদের জন্য এই ওষুধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষায় সেটি Not of Standard Quality (NSQ) হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা CDSCO এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রককে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার হাওড়ায় ভেজাল ওষুধ চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি আমতায় ‘মান্না এজেন্সি’ নামক একটি সংস্থার গুদামে হানা দিয়ে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং সংস্থার মালিক বাবলু মান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও, মার্চ মাসে উল্টোডাঙার একটি হাসপাতাল থেকে মেলে নামী সংস্থার নকল অ্যালবুমিন ইনজেকশন। এপ্রিল মাসে প্রকাশিত CDSCO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাদেশে গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে ১৯৮টি ওষুধ। এর আগের ডিসেম্বরে ভবানীপুরের একটি গোডাউনে প্রায় ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার ভেজাল ওষুধ ধরা পড়ে। ওষুধের গুণমান নিয়ে ক্রমবর্ধমান এই উদ্বেগ জনস্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে তুলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ উঠেছে।