Former Justice A S OKA: কলেজিয়াম প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত পোষণের কারণ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন: সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এএস ওকা

54

ডিজিটাল ডেস্ক ২৮শে অগাস্টঃ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে এবার মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এএস ওকা। বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও, কলেজিয়ামের সুপারিশের ভিত্তিতে দুই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত করা হয়। আর তার একদিন পর, এবিষয়ে সরব হলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এএস ওকা(Former Justice A S OKA)।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টেরই পাঁচ সদস্যের কলেজিয়াম। সেই সুপারিশে কেন্দ্র সিলমোহর দেয়। বুধবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে দুই বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত করা হল। প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কলেজিয়াম, বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অলোক আরাধে এবং বিচারপতি পাঞ্চোলির নাম পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করে। যার ফলে দীর্ঘদিন বাদে শীর্ষ আদালত পূর্ণশক্তি দিয়ে কাজ করবে। সুপ্রিম কোর্টে এই মুহূর্তে বিচারপতির সংখ্যা ৩৪।

কলেজিয়ামের সুপারিশের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন। পাটনা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলির সুপ্রিম কোর্টে ‘উত্তরণ’ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন কলেজিয়াম সদস্য তথা সুপ্রিম কোর্টেরই বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন। তিনি ওই বিচারপতির নামে একাধিক ‘ডিসেন্ট নোট’ জমা দেন। বিচারপতি নাগরত্নের দাবি ছিল, বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলিকে শীর্ষ আদালতে উন্নীত করা হলে ‘আঞ্চলিক সাম্য’ বিঘ্নিত হবে। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই দুজন গুজরাটি বিচারপতি আছেন। আরও একজনকে নিয়োগ করলে কলেজিয়ামের স্বচ্ছ্বতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। তাছাড়া সিয়রিটির নিরিখেও বিপুল পাঞ্চোলির থেকে প্রবীন বিচারপতিদের নাম কেন বিবেচ্য হল না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর আগে বিচারপতি বিপুল পাঞ্চোলির পাটনা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে প্রমোশন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের পরে অক্টোবর ২০৩১ সালে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির অবসরের পরে বিচারপতি পাঞ্চোলি প্রধান বিচারপতি হয়ে যাবেন। এবং এই পদে থাকবেন পরবর্তী দেড় বছর। সুপ্রিম কোর্টের হিসেবে এই ঘটনা বেনজির।

এই বিষয়েই প্রশ্ন ওঠে ঠিক কোন্ মাপকাঠির ভিত্তিতে বিচারপতি পদে নিয়োগ করা হচ্ছে? এরই প্রেক্ষিতে একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এএস ওকাকে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁর অভিমত, কলেজিয়াম প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত পোষণের কারণ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য, ভিন্নমতের কারণ জানা জরুরি। এবিষয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। কারণ এর অনেক ভালো-মন্দ দিক রয়েছে। কলেজিয়াম কর্তৃক গৃহীত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকা উচিত, যা সরকারের ওপরেও নির্ভর করে। এবিষয়ে বিতর্কের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন বিচারপতি ওকা। তবে পাশাপাশি তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যদি কলেজিয়ামের আলোচনা এবং কার্যবিবরণী জনসাধারণের জন্য আপলোড করা হয়, তাহলে এটি কলেজিয়ামের মাধ্যমে বিবেচনা করার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত আইনজীবীদের গোপনীয়তাকে প্রভাবিত করতে পারে।

বিরোধীরা প্রায়শই দাবি করছেন, বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিই প্রশ্ন তোলায় বিরোধীদের সেই দাবিই জোরাল হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।