Hooghly Flood: বানভাসি আরামবাগ,খানাকুল এলাকা,৬ টি পঞ্চায়েত জলের তলায়

47

ডিজিটাল ডেস্ক ৩রা অগাস্টঃ আরামবাগের ৬ পঞ্চায়েত এলাকায় যেমন জলদুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে,তেমনি খানাকুলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই খানাকুলের একাংশে একাধিক গ্রামে নতুন করে প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খানাকুলের মাড়োখানা, জগৎপুর, রাজহাটি-১, পোল-১ ও ২, ধান্যঘোরী, ঠাকুরানিচক পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। খানাকুলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণ নদীও ফুঁসছে। অতিবৃষ্টি ও বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া জলে বানভাসি পরিস্থিতি হুগলির একাধিক এলাকায়। প্লাবিত একের পর পর ব্লক। চাষের জমি তো বটেই জলের নিচে চলে গিয়েছে বাড়িও। অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় জল ঢুকে গিয়েছে ঘরে(Hooghly Flood)।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী গতকাল বিকেল থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। কিন্তু জেলায় জেলায় জল যন্ত্রণার ছবিটা একই রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে জল জমেছে হুগলির বিভিন্ন জায়গায়। ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। আরামবাগে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আরামবাগ-কলকাতা রাজ্য সড়কে উঠেছে জল। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। টানা বৃষ্টির দাপট ও বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া জলে আরামবাগে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি। ৬ টি পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায়। নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক গ্রাম। বহু কাঁচা ও পাকাবাড়ির একতলা জলমগ্ন। আরামবাগের মায়াপুর এলাকায় বেশকিছু দোকানে জল ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হন। বহু গ্রামে কোমর সমান জল ঠেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। DVC যেভাবে জল ছাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হরিপাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। হরিপাল ব্লকের সহদেব, দ্বারহাটা, কৈকালা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। আমন ধানের মরশুমে চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্কুল, কলেজ, বাজার, কোথাও যেতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। কোথাও ঘরে জল ঢুকে গেছে, কোথাও বাড়ছে সাপের উপদ্রব। চরম সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ।

বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে ভাসছে হুগলির আরামবাগের ৬ টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৮টি গ্রাম। বাড়ি, দোকান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভিতরে জল ঢুকেছে। জলের তলায় চলে গেছে পানীয় জলের কল। রাস্তার উপর দিয়ে এমন স্রোতে জল বইছে দেখলে মনে হবে নদী। দ্বারকেশ্বর ও মুন্ডেশ্বরীর প্রায় ৯টি শাখা খাল গেছে এই গ্রামগুলোর উপর দিয়ে। খাল সংস্কার না করার ফলে এই জল যন্ত্রণা বলে অভিযোগ বিজেপির। ডিভিসির ছাড়া জলেই এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বলে পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল। গতকাল ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “চাষবাসের সব ডুবে গেছে, কিছু নেই আমাদের। আমরা এখন কী করে থাকব? আমাদের মাটির ঘর, পাকা ঘর নেই, (মাটির ঘরের) একদিক হেলে চলে গেছে।” আরেক বাসিন্দা শ্যামলী দেওয়ান জানাচ্ছেন, “ঘর, বাড়ি সব আমাদের ডুবে গেছে, মাটির ঘর, সব জল এক কোমর করে হয়ে গেছে। বাচ্চা নিয়ে চাপা পড়ে মরব? আমাদের চারিদিকে জলে ভর্তি হয়ে গেছে।” এক বাসিন্দা সামশুল আলির অভিযোগ, “জল নিকাশি হচ্ছে না, এইজন্য জল ভর্তি হয়ে গেছে, বাড়ি, ঘর সব ডুবে গেছে, ভেঙে পড়ছে। বীজ সব জলের তলায়, বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”

ডিভিসি যেভাবে জল ছাড়ছে তাতে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হবে বলেই আশঙ্কা করছেন খানাকুলের বাসিন্দার । বন্যা দুর্গত মানুষদের অভিযোগ এভাবে সরকারি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখনো হয়নি। জনপ্রতিনিধি থেকে সরকারি আধিকারিক কেউই এলাকায় যাচ্ছেন না বলেই অভিযোগ। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে পরিস্থিতির দিকে তাদের নজর আছে। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।