ডিজিটাল ডেস্ক, ২ জুন : সন্ধ্যায় পুলিশকে হুমকি, আর সকালে সেই হুমকি প্রত্যাহার—এক রাতের মধ্যেই অবস্থান বদলালেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সোমবার তিনি জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে মুর্শিদাবাদের একাধিক থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। পরে আশ্বস্ত হয়ে নিজের মন্তব্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন (Humayun Kabir Controversy Update)।
রবিবার বহরমপুরের দলীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে লালগোলা, বড়ঞা, সামশেরগঞ্জ ও ভরতপুর থানায় এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটে যা সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার করে। তিনি বলেন, বিরোধী আসনে থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো, কিন্তু শাসক দলের বিধায়ক হওয়ার কারণে তাঁর হাত-পা বাঁধা। এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হলে সোমবার সকালে তিনি জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন এবং একাধিক থানার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। বিধায়কের দাবি, পুলিশ সুপার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন, এবং সে কারণে তিনি আগের মন্তব্য প্রত্যাহার করেছেন।
সম্প্রতি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বোলপুরের আইসিকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেন, যার অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দল তাঁকে চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়, এবং তিনি মাত্র ৩৮ মিনিটের মধ্যেই সুব্রত বক্সিকে চিঠি লিখে ক্ষমা চান।
তবে এরপরও তিনি পুলিশি তলব এড়িয়ে যাচ্ছেন। শনিবার ও রবিবার পরপর দুই দিন তিনি হাজিরা দেননি। তাঁর আইনজীবীরা প্রথমে ‘অসুস্থতা’, পরে ‘বেড রেস্ট’-এর যুক্তি দিয়ে হাজিরা থেকে বিরত থাকার কারণ জানান। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে, আদতে কেন তিনি পুলিশি তলব উপেক্ষা করছেন। সূত্রের খবর, হয়তো সোমবারই তিনি আগাম জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভরতপুরের বিধায়ক পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিতর্কে জড়ান। পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণ ও অবস্থান বদলের বিষয়টি অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি করেছে—তিনি কি অনুব্রত মণ্ডলের মতোই সমস্যায় পড়ার আশঙ্কায় হঠাৎ মত পরিবর্তন করলেন? এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা।