India USA Flight Stop : বন্ধ হচ্ছে দিল্লি-ওয়াশিংটন ‘ননস্টপ’ বিমান পরিষেবা, কী জানাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া?

48

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ অগাস্ট : বন্ধ করা হচ্ছে দিল্লি-ওয়াশিংটন সরাসরি বিমান পরিষেবা। শুল্ক নিয়ে সংঘাতকে কেন্দ্র করে আমেরিকার সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই বড় সিদ্ধান্ত নিল এয়ার ইন্ডিয়া। সংস্থার তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই রুটে আর কোনও বিমান চলবে না (India USA Flight Stop)।

কেন এই পরিষেবা স্থগিত করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে বিমানসংখ্যার ঘাটতি রয়েছে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিষেবা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও একটি বড় কারণ হল, পাকিস্তানের আকাশসীমা এখনও ব্যবহারযোগ্য না হওয়ায় বিকল্প পথ ধরে দীর্ঘ উড়ানের চাপ বাড়ছে, যা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে উঠেছে। এই সমস্যাগুলির সম্মিলিত প্রভাবেই আপাতত দিল্লি-ওয়াশিংটন রুটে পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, গত মাস থেকেই সংস্থার ২৬টি বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে, যা চলবে ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত। এই কারণে সংশ্লিষ্ট বিমানগুলি আপাতত পরিষেবার বাইরে থাকছে, ফলে বিমানের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য রুটে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে দিল্লি-ওয়াশিংটন রুটে উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার জেরে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ রয়েছে। ফলে বিমানগুলিকে বিকল্প ও দীর্ঘ পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে, যা পরিষেবা পরিচালনাকে আরও জটিল করে তুলেছে। সব দিক বিবেচনায় এনে ১ সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লি-ওয়াশিংটন সরাসরি উড়ান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে। যাঁরা ওই রুটে ইতিমধ্যে টিকিট বুক করেছেন, তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে অথবা সম্পূর্ণ রিফান্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।

যদিও দিল্লি-ওয়াশিংটন সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধ হচ্ছে, তবে যাত্রীরা ‘ওয়ান স্টপ’ বা একবার বিমান বদল করে এখনও ভারত থেকে ওয়াশিংটন-সহ আমেরিকার বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থাগুলি— আলাস্কা এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ও ডেল্টা এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে যাত্রীরা নিউইয়র্ক, শিকাগো, নেওয়ার্ক, সান ফ্রান্সিসকো ও ওয়াশিংটন ডিসি-তে যেতে পারবেন। এই রুটগুলিতে যাত্রীদের লাগেজ সরাসরি তাঁদের চূড়ান্ত গন্তব্য পর্যন্ত চেক-ইন করা থাকবে, ফলে আলাদা করে ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবে সরাসরি দিল্লি-ওয়াশিংটন পরিষেবা বন্ধ হলেও উত্তর আমেরিকার ভ্যানকুভার, টরন্টো-সহ মোট ৬টি শহরে এয়ার ইন্ডিয়ার সরাসরি বিমান পরিষেবা আগের মতোই চালু থাকবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার নিয়েছে। এরই মধ্যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দিল্লি-ওয়াশিংটন সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক চর্চা। অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধুই কারিগরি বা পরিষেবাগত সিদ্ধান্ত নয়, এর পেছনে রয়েছে কূটনৈতিক টানাপোড়েনেরও প্রভাব।