Iran Attacks Mossad’s HQ : তেল আভিভে মোসাদের সদর দফতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা!

15

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৭ জুন : ইজরায়েলের মাটিতে জোরালো প্রত্যাঘাত ইরানের! ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে মিসাইল হামলা তেহরানের (Iran Attacks Mossad’s HQ)। এমনটাই দাবি করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। শুধু তাই নয়, ইরানের মাটিতে মোসাদের গুপ্তচরদের পাকড়াও করতে জোর কদমে শুরু হয়েছে অভিযান। জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ২৮ জন ইজরায়েলি গুপ্তচরকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইরানের বিভিন্ন জায়গা থেকে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, ইরান ইজরায়েলের বিরুদ্ধে জোরালো প্রত্যাঘাত হেনেছে। তেহরান থেকে মোসাদের সদর দফতরে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, ইরানের ভূখণ্ডে মোসাদের গুপ্তচরদের ধরতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৮ জন ইজরায়েলি গুপ্তচরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত শুক্রবার ইজরায়েল আকাশপথে হামলা চালিয়ে ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারকে টার্গেট করে। এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের একযোগে হত্যা করা হয়, যার মধ্যে ছিলেন ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, এবং ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা। এছাড়া, ইজরায়েল নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা করেন। প্রথম ধাক্কা সামলে নিয়ে ইরান ১৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন হামলা চালায় ইজরায়েলের ওপর। সূত্র অনুযায়ী, ইরানের এই হামলায় তেল আভিভে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং মোসাদের সদর দফতর গুঁড়িয়ে গেছে। সূত্র অনুযায়ী, ইরানের এই হামলায় তেল আভিভে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং মোসাদের সদর দফতর গুঁড়িয়ে গেছে।

তেহরানের পক্ষ থেকে ইজরায়েলে চালানো হামলার একাধিক ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে ইজরায়েলে মোসাদের সদর দফতরে আগুন লেগে যায় এবং পুরো ভবনটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। যদিও ইজরায়েলের তরফ থেকে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি, তবুও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলি এই ফুটেজগুলি সামনে এনেছে। অন্যদিকে, ইজরায়েল দাবি করেছে যে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র তাদের সেনা দফতরের কাছাকাছি একটি পার্কিং এলাকায় গিয়ে আছড়ে পড়ে। সেনা দফতর বা এর আশেপাশে কোনও বড় ক্ষতি হয়নি বলেই তারা জানায়।

১৩ জুন ইরানে হামলার পর ইজরায়েল দাবি করে যে মোসাদের নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে তারা সফলভাবে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে। এরপরই প্রকাশ্যে আসে তথ্য যে ইরানের সেনাবাহিনীর মধ্যেও মোসাদের গুপ্তচর সক্রিয় রয়েছে। এই গুপ্তচরদের পাকড়াও করতে ইরান দেশজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। সূত্র অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের সবাইকে মোসাদের গুপ্তচর বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এছাড়া, এক সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গুপ্তচরদের শনাক্ত করতে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার ইজরায়েল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তাদের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের যুদ্ধকালীন চিফ অফ স্টাফ বা সেনা সর্বাধিনায়ক আলি শাদমানি নিহত হয়েছেন। ইজরায়েলি সেনার মতে, তাদের হামলায় নিহত ইরানি নেতাদের মধ্যে শাদমানি সবচেয়ে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইজরায়েলের দাবি যদি সত্য হয়, তাহলে এটি ইরানের জন্য বড়সড় ধাক্কা হবে। শাদমানি ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই-এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। তবে, ইরান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। গত ১৩ জুন ইরানের সেনাপ্রধান গোলাম আলি রশিদ নিহত হওয়ার পর আলি শাদমানি সেই পদে বসেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় বসার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু ইরানের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।