ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ জুন : ইরান ও ইজরায়েলের চলমান সংঘাতের মধ্যে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে কিনা—এ প্রশ্ন উঠছে। ইরান দাবি করেছে, সোমবার তারা বিধ্বংসী মার্কিন MQ-9 ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। ইরানের আকাশে মার্কিন ড্রোনের উপস্থিতি নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে—তবে কি যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দুর্বল করতে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি হামলার পথ বেছে নিচ্ছে? বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে, এবং সংশ্লিষ্ট দেশের কূটনৈতিক অবস্থান পর্যালোচনা করা হচ্ছে (Iran-Israel Conflict)।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইরান-ইরাক সীমান্তবর্তী ইলাম প্রদেশে ইরানের সেনাবাহিনী MQ-9 ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। ফার্স নিউজ এজেন্সির দাবি অনুযায়ী, দেহলোরান শহরের উপরে ড্রোনটি ধ্বংস করা হয়। এদিকে, রুশ সংবাদমাধ্যম ‘তাস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই অঞ্চলের ডেপুটি গর্ভনর নিশ্চিত করেছেন যে ড্রোনটি মার্কিন সেনাবাহিনীর ছিল এবং এটি ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল, যার ফলে এটি গুলি করে নামানো হয়। তবে, ড্রোনটি হামলার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল নাকি নজরদারির জন্য পাঠানো হয়েছিল, সেই বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে ইজরায়েলের আকাশপথে হামলা সংঘটিত হয়। এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্তাদের পাশাপাশি ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন, যা এক নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়েছেন, এই হামলার আগাম তথ্য তাঁদের কাছে ছিল। যদিও তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ইজরায়েলের এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান যদি আমেরিকার উপর হামলা চালায়, তবে তাদের এমন শিক্ষা দেওয়া হবে যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
ইজরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পালটা আঘাতের ফলে ইজরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি মার্কিন দূতাবাসের সামনেও আছড়ে পড়েছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র, যার ফলে দূতাবাসের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের আকাশপথে মার্কিন ড্রোনের উপস্থিতি যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি, ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে, যা একটি বড়সড় সংঘাতের ইঙ্গিত দিতে পারে।
MQ-9 রিপার হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক মারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন, যা নজরদারি চালানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা পরিচালনায় অত্যন্ত কার্যকর। স্যাটেলাইট নির্ভর এই ড্রোনে ৬টি স্টোর পাইলন রয়েছে, যেখানে ৯১ কেজি থেকে ৬৮০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করা সম্ভব। এছাড়া, এটি একাধিক মিসাইল বহন ও নিক্ষেপ করতেও সক্ষম, যা যুদ্ধক্ষেত্রে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।