Jadavpur University: পুলিশের চোখে হিন্দোল-আনসারী দুজনেই এক ? যাদবপুরে হামলার মূলচক্রী হেফাজতে

48

ডিজিটাল ডেস্ক ১৬ই অগাস্টঃ যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার জেরে মূলচক্রী হিসেবে হিন্দোল মজুমদারকে আগেই দিল্লী এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর স্পেনে বসেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার ছক কষেছিলেন হিন্দোল। শুক্রবার আলিপুর আদালতে এমন দাবি করে কলকাতা পুলিশ। আদালত আগামী সোমবার ১৮ই অগস্ট পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ২০০২ সালে আমেরিকান সেন্টারে হামলার সময় কলকাতা তথা ঘটনাস্থলে ছিল না মূল চক্রী আফতাব আনসারি। পরে বেরিয়ে এসেছিল ষড়যন্ত্রের তথ্য(Jadavpur University)।

গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ‌্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাতে জখম হন ব্রাত্য বসু নিজেও। অভিযোগ, সেদিনের ঘটনার মূল চক্রী ছিলেন হিন্দোল মজুমদার। ঘটনার সময় তিনি স্পেনে ছিলেন। কিন্তু হোয়াটসঅ‌্যাপ গ্রুপে অন‌্য সদস‌্যদের এই সংক্রান্ত নির্দেশ ও পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার স্পেনের গ্রানাডা থেকে দিল্লিতে নামার সঙ্গে সঙ্গেই যাদবপুরের প্রাক্তনী তথা গবেষক হিন্দোল মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। শুক্রবার হিন্দোলকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তর আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান।

হিন্দোল মজুমদারের আইনজীবীরা সওয়ালে বলেন, গন্ডগোলের দিনের ঘটনায়, অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে FIR হয়েছিল। পুলিশ কেন ২ টো FIR করেছে? এক ঘটনায় ২টো FIR কেনয শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে গন্ডগোলের ঘটনায় আগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, সকলের জামিন হয়ে গেছে। তারপর নতুন করে গ্রেফতার করা হল কেন? হিন্দোল মজুমদারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট করে কী অভিযোগ রয়েছে? একজন স্পেনে বসে গবেষণা করছেন, তিনি কী করে অশান্তির পরিকল্পনা করতে পারেন? পাল্টা সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে যে গন্ডগোল পাকানো হয়েছিল, তা পূর্বপরিকল্পিত। শুধু শিক্ষামন্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে তা নয়, জাতীয় পতাকা পোড়ানো হয়েছে। পুরো ঘটনাটাার মূল চক্রী হিন্দোল মজুমদার। স্পেনে বসে তিনি পুরোটা করিয়েছেন। পাল্টা হিন্দোল মজুমদারের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, হিন্দোলের আইনজীবীরা। পাল্টা সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কয়েকজনের বয়ানে উঠে এসেছিল হিন্দোলের নাম। সেখান থেকেই তাঁর জড়িত থাকার কথা জানা গেছে। এরপরই সরকারি আইনজীবী, কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের কপির কিছু লাইন উদ্ধৃত করেন। পাশাপাশি দাবি করেন গণ্ডগোলের দিন শিক্ষামন্ত্রীর বড় কিছু হতে পারত। হামলার পিছনে কী কারণ, মাস্টারমাইন্ড অন্য় কেউ কিনা তা জানার জন্য়, হিন্দোল মজুমদারের মোবাইল ফোন থেকে ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহ করতে চায় পুলিশ।

২০০২ সালের ২২ জানুয়ারি কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ৫ পুলিশ কর্মী। সেই ঘটনার মূল চক্রী ছিল জঙ্গি আফতাব আনসারি। আফতাব দুবাই পুলিশের জালে পড়ে। তাকে ভারতে ফেরানো হয়। আফতাব সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে খুন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, ষড়যন্ত্র-সহ বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনে কলকাতা পুলিশ। শুনানি শেষে বিশেষ আদালত ৭ জনকেই ফাঁসির সাজা শোনায়। পরে হাইকোর্ট আফতাব আনসারির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আফতাবের প্রাণদণ্ডের সাজা কমিয়ে তাকে আজীবন জেলে বন্দি রাখার নির্দেশ দেয়।

আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেন, অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় পতাকা অবমাননা ধারা আছে। পতাকা পোড়ানো হয়েছে। হোয়াট অ‌্যাপ চ‌্যাটে প্রমাণিত যে, পুরোটাই পরিকল্পিত ও সংগঠিত। বিদেশে বসেই করা হয়েছে। আরও অন‌্য সাক্ষীর বয়ানের সঙ্গে হোয়াটসঅ‌্যাপ চ‌্যাট প্রসঙ্গ মিলেছে। তাঁরা বলেছেন যে, হিন্দোলের কথামতো কাজ করা হয়েছিল। তিনি মূল চক্রী ও তিনিই পুরোটা করিয়েছেন। ৬ মাসের তদন্তে তাঁর ভূমিকা সুনিশ্চিত হওয়ার পর লুক আউট নোটিস দেওয়া হয়। হঠাৎ করে বাইরে বসে মন্ত্রীর উপর হামলার উদ্দেশ‌্য কী? কেউ কি তাঁকে ব‌্যবহার করে এই কাজ করিয়েছেন কি না, জানতে জেরার প্রয়োজন।