ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ অগাস্ট : আজ জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বিকেল পাঁচটার সময় ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক জনসমাবেশে ঘোষণাপত্রটি উন্মোচন করা হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করতে গত বছরের জুলাই-আগস্টে হওয়া ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায় ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (July Declaration Bangladesh)। গোপনীয়তার সঙ্গে তৈরি হওয়া ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক, সাংবিধানিক এবং শাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে ২৬ দফা রূপরেখা রয়েছে। ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু এবং এটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত কিনা তা নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতবিরোধ অব্যাহত রয়েছে।
গত বছর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকারের পতন হয়। ঢাকা থেকে ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ঘটনার ঠিক এক বছরের মাথায় জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পর, গত ২৮ জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি প্রাথমিক খসড়া প্রকাশ করা হয়। নথির খসড়া তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের নির্দেশেই তৈরি হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দিনটিকে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্ররা। তাদের অন্যতম দাবি ছিল, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের শেখ মুজিবর রহমানের সংবিধানকে বাতিল করে আওয়ামি লিগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করতে হবে। এবং এই ঘোষণার জন্য একটি বিশাল সমাবেশের পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।
ইউনূসের সরকার প্রথমে এবিষয়ে দূরত্ব রাখলেও পরে সরকার নিজেই সমস্ত অংশগ্রহণকারী ছাত্র, রাজনৈতিক দল এবং অংশীদারদের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করে “জুলাই বিদ্রোহের ঘোষণা” প্রস্তুত করার কথা জানায়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যে সংসদের বাইরে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এমন কোনও পরিবর্তন আনার কোনও সুযোগ নেই। আর যেহেতু এই মুহূর্তে সংসদ নেই তাই সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয়। তাঁর দাবি, সংবিধানে যদি কোনও সংশোধনী আনতে হয়, তাহলে তা সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে। দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিল হলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় তৈরি হবে।
ফলে ঘোষণপত্র প্রকাশের পর সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদের চূড়ান্ত সংস্করণে স্বাক্ষর এবং তা গ্রহণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।