Kasba Murder Mystery : কসবায় একই পরিবারে তিনজনের রহস্যমৃত্যুতে সামনে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, কী আছে সুইসাইড নোটে?

10

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ জুন : দক্ষিণ কলকাতার কসবা থানার রাজডাঙা গোল্ড পার্ক এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় একই পরিবারের তিন সদস্যের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে, যা আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে (Kasba Murder Mystery)। প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের পুত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে—“আমরা ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সমর্পণ করছি।” এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, এবং পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে যাতে ঘটনার আসল কারণ স্পষ্ট হয়।

দক্ষিণ কলকাতার কসবা থানার রাজডাঙা গোল্ড পার্ক এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। মৃতরা হলেন সরজিৎ ভট্টাচার্য (৭০), তাঁর স্ত্রী গার্গী ভট্টাচার্য (৬৮) এবং তাঁদের ছেলে আয়ুষ্মান ভট্টাচার্য (৩৮)। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে প্রতিবেশীরা কসবা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে, ফ্ল্যাট ভিতর থেকে বন্ধ। এরপর দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তারা তিনটি ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ঝুলে পড়ার ফলে, এবং তাঁদের গলায় স্পষ্ট ও অবিচ্ছিন্ন দাগ রয়েছে। শরীরের অন্য কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, যা আত্মহত্যার সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে, তবে বিষয়টি আরও বিশদভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভট্টাচার্য পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে ভুগছিল, তবে সুইসাইড নোটে এর কোনো উল্লেখ নেই। নোটে লেখা রয়েছে—“আমরা স্বেচ্ছায় পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি, ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সমর্পণ করছি।” এছাড়া, শেষ ইচ্ছা হিসাবে তিনজনকে একসঙ্গে একই স্থানে দাহ করার আবেদনও জানানো হয়েছে।

তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, সরজিৎ ভট্টাচার্য জমি ও বাড়ি কেনাবেচার দালালির কাজ করতেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিনি ও তাঁর পুত্র আয়ুষ্মান খুব বেশি বাইরে যেতেন না, বরং বেশিরভাগ সময় ঘরেই থাকতেন। প্রতিবেশীদের মতে, আয়ুষ্মান হাঁটার সময় টেনে টেনে চলতেন, যা তাঁর কোনো শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনার পর ট্যাংরা কাণ্ডের স্মৃতি ফিরে আসছে অনেকের মনে। কয়েক মাস আগে ট্যাংরার একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল, যেখানে আত্মহত্যার পূর্বাভাস মিলেছিল। কসবা থানার পুলিশ তদন্তের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সম্ভাবনার দিক খতিয়ে দেখছে। বিশেষভাবে সুইসাইড নোটের হাতের লেখার মিল, পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি, এবং প্রতিবেশীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে, যাতে ঘটনার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হয়।