ডিজিটাল ডেস্ক, ২ জুন : শহরের রাস্তায় ফের একবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনা (Kolkata News)। বেহালা শখের বাজারে বাসের চাকায় চাপা পরে মৃত্যু হল এক মহিলার, নাম যমুনা মন্ডল বয়স ৪৬ বছর। স্থানীয় সূত্র থেকে যানা যাচ্ছে রায়চক থেকে বাসটি তারাতলার দিকে যাচ্ছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সেই বাস সখেরবাজার মোড়ে পৌঁছোলে মহিলা বাস থেকে নামতে যান। সেই মুহূর্তেই ঘটনাটি ঘটে। শিলপাড়া পুষ্পশ্রী সিনেমা হল এর সামনে বাস থেকে নামতে গিয়ে মহিলা বাসের দরজায় শাড়ি জড়িয়ে পরে যান। বাস ছেড়ে দিলে ঐ বাসের পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। রায়চক-ধর্মতলা রুটের একটি বাসে ছিলেন তিনি। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
সাধারণ ভাবে সখেরবাজার মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশের নিরাপত্তা থাকে। সোমবারের ঘটনায় প্রশাসনের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, বাসটির গতি কেমন ছিল, চালকের দিক থেকে গাফিলতি ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। মহিলাকে উদ্ধার করে বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ তাঁর পরিবারকে খবর দিয়েছে। ঘাতক বাসটিকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। প্রায়শই কলকাতার রাস্তায় পথ দুর্ঘটনার খবর সামনে চলে আসে।
আগের বছরেই মানিকতলা মেন রোডে দুর্ঘটনা , ২ শিশু-সহ ১ মহিলা আহত। বেঙ্গল কেমিক্যালসের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে গাড়ি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩ জনকেই নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয়দের পথ অবরোধ। এর আগে বেহালায় এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বেহালা চৌরাস্তার কাছে বড়িশা স্কুলের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। অভিযোগ ছিল, স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বেপরোয়া গতির বলি হয় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।
প্রসঙ্গত কলকাতায় বাস দুর্ঘটনা কমাতে ‘যাত্রী সাথী অ্যাপ’ চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই অ্যাপের সাহায্যে বাসের গতির উপর নজরদারি রাখতে পারবে পুলিশ ও পরিবহণ দফতর। যদি কোনও বাসের গতি অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, তা জানতে পারবে পুলিশ। পাশাপাশি বাসটি কোথায় রয়েছে তাও ট্র্যাক করা যাবে। ২০১৬ সালে ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’-এর উদ্বোধন হয়। এরপর থেকে দুর্ঘটনা অনেক কমেছে বলে দাবি করেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আগে বছরে ৭০ হাজার দুর্ঘটনা ঘটত, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে তেরো হাজারে।’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে দুর্ঘটনা আরও কমানো যায় সেই প্রচেষ্টাও চলছে বলে জানান স্নেহাশিস চক্রবর্তী।