Kolkata News: রাজারহাটে ট্যাংরার ছায়া, একই পরিবারের ‘আত্মঘাতী’২, আশঙ্কাজনক ১,

68

ডিজিটাল ডেস্ক ৮ই অগাস্টঃ রাজারহাটের গোপালপুর বাবলাতলা এলাকায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। পরিবারে আর্থিক অনটনের জেরে আত্মহত্যার চেষ্টা। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের, আর এক জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবলাতলার একটি বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সঞ্জয় দে (৫৪) নামে এক ব্যক্তি। তিনি শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সঞ্জয়ের বাবা-মা ওই রাজারহাট এলাকাতেই অন্য একটি বাড়িতে থাকতেন। সঞ্জয়ের এক ভাই ও এক বোন রয়েছেন, তবে বোনের সঙ্গে দীর্ঘদিন কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেই সঞ্জয় জানিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবারের পর থেকে সঞ্জয় ও তার পরিবারের কোনও খোঁজ মিলছিল না(Kolkata News)।

ট্যাংরার ঘটনার ছায়া এবার রাজারহাটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় দে নামে এক ব্যক্তি স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে ওই এলাকায় ভাড়া থাকতেন। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ফলে প্রচুর ধার হয়ে যায় বাজারে। দেনা শোধ করতে নিজের বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে ভাড়া বাড়িতে উঠে আসেন প্রায় ৯ মাস আগে। তবে দেনার চাপ কমেনি। অভিযোগ, বাজারের একাধিক ব্যক্তি তাঁর কাছে টাকা পেতেন।

ঘটনার দিন ঘরের মধ্যে সঞ্জয়,তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ি মিলে প্রায় ৪০টি প্রেশার ও ঘুমের ওষুধ খান। পুলিশ জানায়,ঘটনাস্থল থেকেই অচেতন অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সঞ্জয়ের স্ত্রী ও শাশুড়িকে মৃত ঘোষণা করা হয়, আর সঞ্জয়কে ভর্তি করা হয় আরজিকর হাসপাতালে। বাড়ির মালিক রূপম সাহা জানিয়েছেন, সকালে বাড়িতে সংবাদপত্র পড়ে থাকত, কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। হঠাৎই বৃহস্পতিবার সকালে ভাড়াটিয়ার ঘরের ভিতর থেকে গোঁ গোঁ শব্দ শুনে সন্দেহ হলে তিনি তৎক্ষণাৎ নারায়ণপুর থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, সঞ্জয়ের স্ত্রী ও শাশুড়ি মাটিতে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এবং সঞ্জয় নিজে অসুস্থ অবস্থায় কাতরাচ্ছেন। সঞ্জয়ের দাবি, সঞ্জয় ও তার পরিবার গত ৯ মাস ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন এবং ১১ মাসের চুক্তি অনুযায়ী আরও দু’মাস ভাড়ার মেয়াদ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা অশান্তির কথা আগে কখনও ওঠেনি। তবে সম্প্রতি সঞ্জয় আর্থিক ক্ষতির কথা বলেছিলেন বলে জানান বাড়িওয়ালা। জানা যায়, গত সোমবার সঞ্জয়ের বাড়িতো কাজের লোক কাজ করে যান। তারা কাজের লোককে জানিয়েছিলেন,মঙ্গলবার থেকে তারা থাকবেন না, ঘুরতে যাবেন। এরপরেই মঙ্গলবার থেকে কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁদের।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। দু’জনের মৃত্যু হলেও, সঞ্জয়বাবু প্রাণে বেঁচে যান। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের জট। কী কারণে বাজারে এত টাকা ধার হয়ে গেল তাঁর, কাদের থেকেই বা টাকা ধার নিয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। আপাতত প্রতিবেশী এবং পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টায় তদন্তকারীরা। বলে রাখা ভালো, এই ঘটনা যেন আরও একবার ট্যাংরা কাণ্ডের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। সেখানে দুই ভাই তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে। পরিবারের এক কন্যাসন্তান-সহ দুই মহিলার মৃত্যু হয়। পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তান-সহ দুই ভাই অবশ্য প্রাণে বেঁচে যান। এই ঘটনায় এখনও চলছে তদন্ত।