ডিজিটাল ডেস্ক, ১৯ জুলাই : নিরবচ্ছিন্নভাবে পাথর গড়িয়ে পড়ায় শনিবারও অবরুদ্ধ রইল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এর ফলে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম ও কালিম্পংগামী যাত্রীদের বিকল্প পথ ধরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে ধস সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হলেও, পাথর ও মাটি লাগাতার নেমে আসায় কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এদিকে, নতুন করে ভূমিধসের জেরে লাভা-গোরুবাথান সড়কও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। শিলিগুড়ির জাতীয় মহাসড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) দফতর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে (Landslide National Highway)।
এদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রবিবার থেকে বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে ভূমিধসের আশঙ্কা আরও জোরদার হয়েছে, যার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শনিবার জাতীয় মহাসড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেভক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি অংশে পাথর গড়িয়ে পড়া ও ভূমিধসের কারণে শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ধস সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হলেও, টানা পাথর এবং মাটি নামতে থাকায় কাজ করা কঠিন হয়ে উঠেছে।
এনএইচআইডিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক আংশিকভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, শুক্রবার সকালে কালিম্পং জেলার বিরিকদারায় একটি বড়সড় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে, যার ফলে জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
একই দিন রাতে আরও একটি ধস নামে লাভা-গোরুবাথান সড়কে, ফলে সেটিও বন্ধ হয়ে পড়ে। নিরাপত্তার কারণে পান্ডারা চেকপোস্ট থেকে অতিরিক্ত কোনও যানবাহনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
গ্যাংটকের দিকে হালকা যানবাহনের জন্য দুটি বিকল্প রুটের কথা জানানো হয়েছিল:
শিলিগুড়ি–জোরবাংলো–তিস্তা বাজার–রংপো–গ্যাংটক
শিলিগুড়ি–সেভক–ডামডিম–গোরুবাথান–লাভা–আলাগারাহ–রংপো–গ্যাংটক
এই দুটি বিকল্পের মধ্যে দ্বিতীয় রুটটিতে ধস কিছুটা সরানোর পর একমুখী যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে সেখানেও প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এনএইচআইডিসিএলের পক্ষ থেকে যাত্রীদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে, বিকল্প রুটের একটি নির্দিষ্ট স্থানে এখনও ধস সরানোর কাজ চলছে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে যাতায়াতের ঝুঁকি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বাড়ছে। ফলে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায়, রবিবার কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে কমলা সতর্কতা (Orange Alert) জারি করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।