Malegaon Blast Sadhvi Pragya Acquitted : মালেগাঁও বিস্ফোরণে বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞা-সহ ৭ অভিযুক্তই বেকসুর খালাস

50

ডিজিটাল ডেস্ক, ৩১ জুলাই : মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর-সহ ৭ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিল এনআইএ-এর বিশেষ আদালত। বিচারক একে লাহোটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে মামলা চালানো যায় না। তিনি আরও মন্তব্য করেন, সরকার পক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্দোষ প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে (Malegaon Blast Sadhvi Pragya Acquitted)।

মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞা ঠাকুর ছাড়াও ‘হাই প্রোফাইল’ অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত এবং বাংলার বাঁকুড়ার বাসিন্দা স্বামী অসীমানন্দ ওরফে নবকুমার সরকার। তবে পরে অসীমানন্দের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। এদিন এনআইএ-এর বিশেষ আদালত যাঁদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রজ্ঞা ঠাকুর, কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত, প্রাক্তন মেজর রমেশ উপাধ্যায়, সুধাকর চতুর্বেদী, অজয় রাহিরকর, সুধাকর ধার দ্বিবেদী ওরফে শংকরাচার্য এবং সমীর কুলকার্নি। বিচারক একে লাহোটি রায়ে বলেন, “এটি সমাজের কাছে এক ভয়াবহ ঘটনা বটে, কিন্তু কেবল নৈতিকতার ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে না আদালত।”

বিচারক তাঁর রায়ে জানান, পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থাগুলি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট জোরালো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। সেই কারণে তাঁদের ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ দিয়ে নিরপরাধ ঘোষণা করা হচ্ছে। এই মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁরা হলেন—ভোপালের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর, তৎকালীন সেনা গোয়েন্দা আধিকারিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ শ্রীকান্ত পুরোহিত, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিরকর, সুধাকর দ্বিবেদী, সুধাকর চতুর্বেদী এবং সমীর কুলকার্নি।

২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, রমজান মাসে এবং নবরাত্রির ঠিক আগে, মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বছরের অক্টোবরেই সাধ্বী প্রজ্ঞাকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মোটরসাইকেলটি ছিল তাঁর নামে রেজিস্টার্ড। মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন শাখা (ATS) দাবি করেছিল, সাধ্বী প্রজ্ঞা এই বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রকারিণী। তদন্তে এটিএস জানায়, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় পূর্বে ঘটে যাওয়া একটি জঙ্গি হামলার বদলা নিতে রমজান মাসে এই হামলার ছক কষেছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার মালেগাঁও শহরে ঘটে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ঘটনায় ৭ জন প্রাণ হারান এবং আহত হন শতাধিক মানুষ। তদন্তে উঠে আসে, শহরের এক মসজিদের কাছের কবরস্থানে রাখা একটি মোটরবাইকে দু’টি বোমা লুকোনো ছিল, যেগুলির বিস্ফোরণেই ঘটে বিপর্যয়। মহারাষ্ট্র সন্ত্রাসদমন শাখা (ATS)-এর প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এই হামলার পেছনে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের হাত রয়েছে। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত মোটরবাইকটি প্রজ্ঞা ঠাকুরের নামে রেজিস্টার্ড ছিল, যা তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে দাঁড়ায়।

ATS-এর অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে লক্ষ্য করেই এই হামলার ছক কষা হয়েছিল। এরপর একে একে গ্রেফতার করা হয় সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর, লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিতসহ মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের।