ডিজিটাল ডেস্ক ২৮শে জুলাইঃ সোমবার বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সেই রূপরেখা ঠিক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘ভাষা আন্দোলনে’ নেতৃত্ব দিতে রবিবার বিকেলেই বোলপুর পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রসাশনিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই জেলার একাধিক সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশও দেন। এদিন তিনি ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর লাগাতার নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে। তার প্রতিবাদে বড়সড় আন্দোলনের ডাক আগেই দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata At Bolpur)।
সেখান থেকেই বীরভূমে ২ তৃণমূল কর্মী খুন নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কয়েকদিনে দুই তৃণমূল কর্মী খুন হয়ে গেল। আইসির দায়িত্ব ছিল না খবর রাখার? ছিল বলেই আমি মনে করি।” এরপর তিনি আরও বলেন, “খুন হয়ে গেলেই আগে একটা রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একটা এফআইআর হলে যতক্ষণ সেটা নিয়ে কিছু না প্রমাণ হচ্ছে, ততক্ষণ…।” ডিএম-এসপি থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সকলকেই ভেবেচিন্তে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে। এই অবস্থাতেও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে। রাজ্যের টাকাতেই সব কাজ হবে। এলাকার কাজের জন্য জেলা পরিষদ থেকে ৫ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ৫ শতাংশ, স্থানীয় এমএলএরা ১০ লক্ষ টাকা দেবেন। এই সব টাকা নিয়ে জমা পড়বে ডিএমদের কাছে। বাকি টাকা দেবে রাজ্য সরকার।”
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “দরকার নেই দালালদের সাহায্য নিয়ে বাইরে গিয়ে কাজ করার। ওদের উপর অত্যাচার হলে দালালরা থাকে না, পালিয়ে যায়। ওঁরা ফিরে এলে এখানে যদি থাকার জায়গা থাকে, তাহলে তো ভালো। আর তা না থাকলে, আমরা ক্যাম্প বানিয়ে দেব। রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, কর্মশ্রী প্রকল্পে ওঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেব। ওঁদের জব কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে।”
সোমবার, বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, ”বাইরে আমাদের ২২ লক্ষ। তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন এবার।” উল্লেখ্য, কোভিড মহামারীর সময়ে বাংলা থেকে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বহু পরিযায়ী শ্রমিককে নিজেদের খরচে রাজ্যে ফিরিয়ে এনেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।
তবে ৫ বছর পর পরিস্থিতি ভিন্ন। বাংলার শ্রমিকরা বাইরের রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই তাঁদের বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। চলছে অত্যাচারও। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের উদ্ধারে সাহায্য করছে রাজ্য প্রশাসন। এসব সম্পূর্ণ রুখে দিতে মমতার সমাধান সূত্র, সব পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হোক। রাজ্য সরকার জব কার্ড দিয়ে তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেবে।