Mamata Banerjee Angry In Bidhansabha:বাংলা বললেই নিজের দেশেই আটক ! ‘বাংলাদেশি’ তরজায় বিধানসভায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
ডিজিটাল ডেস্ক ২৪জুনঃ ‘বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি?’আজ মঙ্গলবার বিধানসভায় এমনই বিস্ফোরক প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজস্থানে বাংলাভাষী শতাধিক ব্যক্তিকে ‘বাংলাদেশি’ পরিচয়ে আটকে রাখার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র কটাক্ষও করেন তিনি (Mamata Banerjee Angry In Bidhansabha)।
দিন কয়েক আগে, রাজস্থানে অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০ জন বাঙালি ভাষাভাষী নাগরিককে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণেই তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে রাখা হচ্ছে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে সরব হন।
মমতা এদিন বলেন,“বাংলা ভাষায় কথা বললেই কি অপরাধ? তাহলে বলে দেওয়া হোক, বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ। রাজস্থানে যাঁরা আটক হয়েছেন, তাঁরা কারও বাবা, কারও ভাই, কারও সন্তান। তাঁরা কেউ বাংলাদেশি নন তাঁরা উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার এলাকার বাসিন্দা, ভারতের নাগরিক।”মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “আমি নিজে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা জানিয়েছেন, ভারত সরকার স্পষ্ট ছাড়পত্র দিয়েছিল। তাহলে আজ তাঁদের কেন আটক রাখা হচ্ছে?”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “এই সরকার কি বাংলা ভাষাকে নিষিদ্ধ করতে চাইছে?” তিনি তুলনা টানেন দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে। বলেন, “তামিলনাড়ুতে অনেকে সিংহলী ভাষায় কথা বলেন, কেউ কেউ নেপালি ভাষাও বলেন। তাহলে কি তাঁদের শ্রীলঙ্কা বা নেপালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে?”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার দেখছি, বাংলা ভাষার সঙ্গে যেন এক অদৃশ্য শত্রুতা চলছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর আসছে। বাংলাকে বাদ দিয়ে কি ভারতবর্ষের ঐতিহ্য টিকবে?”
এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রের ‘ভাষা রাজনীতি’র বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা আরও বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি—তাঁরা সকলেই এই বাংলা ভাষাতেই কথা বলতেন!” তাঁর মতে, “যদি শুধু বাংলা বলার অপরাধে কাউকে বাংলাদেশি বলে দাগানো হয়, তাহলে সেটা দেশের সংবিধানের অবমাননা। সংবিধান সকল ভাষার মর্যাদা দেয়—তার মধ্যে বাংলা অন্যতম।”
সব শেষে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই ঘটনা যদি বন্ধ না হয়, বাংলার মানুষের প্রতি এই অন্যায় যদি চলতেই থাকে, তাহলে আমরা কড়া আন্দোলনে নামব। বাংলাকে হেয় করার কোনও চেষ্টাই বরদাস্ত করব না।”এর পরে রাজস্থানের বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিশেষ নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, রাজস্থানের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব আটক হয়ে থাকা বাঙালিদের মুক্ত করার জন্য।