Mamata Banerjee On Ghatal Flood : দেড় মাস ধরে জলের তলায় ঘাটাল! বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর! মিটবে সমস্যা?
ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ অগাস্ট : বন্যাকবলিত ঘাটালের পরিস্থিতি মঙ্গলবার পরিদর্শন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি বর্ষায় কেন ঘাটাল জলাবদ্ধতায় ভুগতে হয়, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি আবারও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও ডিভিসিকে দায়ী করেন। এরপর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, ‘অ্যাকশন’ হবে! পাশাপাশি বন্যা মোকাবিলার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তার রূপরেখাও তুলে ধরেন মমতা। ঘাটাল থেকেই নতুন পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে তিনি জানান, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই পরিকল্পনাটি কার্যকর করা শুরু হবে (Mamata Banerjee On Ghatal Flood)।
মঙ্গলবার বন্যাকবলিত ঘাটালের পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি বছর বর্ষায় ঘাটাল কেন জলজটে ভোগে, সেই প্রশ্ন তুলে তিনি ফের কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও ডিভিসিকে কাঠগড়ায় তোলেন। অভিযোগের সুরে জানান, পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারে না তারা। এর পরেই কড়া বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবার ‘অ্যাকশন’ নেওয়া হবে। বন্যা রুখতে কী ধরনের পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তার একটি প্রাথমিক রূপরেখাও ঘাটাল থেকেই তুলে ধরেন তিনি। জানান, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার।
ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে হুগলির আরামবাগ ও খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তিনি রওনা দেন ঘাটালের উদ্দেশে। পথে তিনি থামেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে। সেখানে গ্রামের বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং তাঁর হাতে তুলে দেন বিদ্যাসাগরের একটি আবক্ষ মূর্তি— বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় রাজ্য সরকারের অবস্থানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই উপহার। মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেন। এরপর তিনি ঘাটাল পৌঁছে রাস্তায় থাকা একটি স্বাস্থ্য শিবিরে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একহাত নিলেন DVC-কে। তাঁর কথায়, ‘‘গত ২০ বছর ধরে DVC কোনও ড্রেজিং করেনি। বর্ষা এলেই জল ছাড়ে, কিন্তু একবারও ভাবে না তার পরিণাম কী হতে পারে।’’ এরপরই তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘এই অন্যায় আর বরদাস্ত করা হবে না। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরেই আমরা ব্যবস্থা নেব। DVC যখন জল ছাড়ে, তখন তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার জন্য পরিকল্পনা করা হবে। প্রয়োজনে নতুন বাঁধ তৈরি করে সেই জল রুখব।’’ একইসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বন্যা হলে বিহার কিংবা অসমের মতো বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রীয় সাহায্য পায়। কিন্তু বাংলা সবসময় বঞ্চিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে কেন্দ্র।’
এদিন বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বড়সড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বর্ষার জেরে বহু কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। কারও ধান, কারও পাট, আবার কারও আলুচাষ নষ্ট হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারই ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নিচ্ছে। শস্যবিমার পুরো টাকা আমরা দেব। জল কিছুটা নামলেই কৃষিদপ্তর মাঠে নেমে সমীক্ষা করবে এবং দ্রুত কৃষকদের হাতে বিমার টাকা তুলে দেওয়া হবে।’’
এরই পাশাপাশি ভোটার লিস্ট ইস্যুতে মমতা বলেন, “আধার কার্ড কে তৈরি করেছিল? ভারত সরকার, এপিক কার্ড কারা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কেন সেইগুলিকে মানা হবে না। এত কোটি কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে, তা কী জলে চলে যাবে। রেশন-আধার -এপিক কার্ড হবে না। তা কি হবে? এটা কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে পরিকল্পনা মাফিকস গেম খেলছে। আমরা এটা মানব না।” এসআইআরের আড়ালে কেন্দ্র এনআরসির পরিকল্পনা করছে বলেও আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটালবাসীকে পরামর্শ, “সবাই ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন।”