Mamata Banerjee On NRC : এনআরসি ইস্যুতে কেন্দ্র-কমিশনকে মমতার তোপ, বীরভূম থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঙ্কার

78

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ জুলাই : সোমবার বোলপুরে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ থেকে তীব্র হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলায় যদি কারও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে, তাহলে প্রতিবাদের দামামা বাজবে। ছৌ নাচ, ধামসা-মাদল, শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়েই প্রতিবাদ জানানো হবে। আমি যতদিন বাঁচব, বাংলার মাটিতে এনআরসি হতে দেব না। প্রয়োজনে জীবন দেব, কিন্তু বাংলার মানুষের ভাষা ও ঠিকানা কেড়ে নিতে দেব না (Mamata Banerjee On NRC)।”

এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “এখন সরকারের হয়ে কমিশনই এনআরসি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। মানুষের পরিচয় ও বাসস্থানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলার ইতিহাস ভুললে চলবে না।”

মঞ্চ থেকে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “চিন্তা নেই, আমরা গুলি-বন্দুক হাতে নেব না। আমাদের প্রতিবাদ হবে শঙ্খ, কাঁসর-ঘণ্টার শব্দে—শান্তিপূর্ণ, কিন্তু বজ্রগর্জনের মতো।”

বিজেপিকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, “ভাবছো ক্ষমতায় বসে যা খুশি তাই করবে? মনে রেখো, ২০২৯ সাল পর্যন্তও তোমাদের সরকার থাকবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।” কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “এরা এমন ভাব করছে যেন দেশটা ওদের বাপ-ঠাকুরদার জমিদারি। আমি স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি, এই দেশ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়—দেশটা মানুষের, তোমাদের নয়।” মার্কিন প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, “ট্রাম্পবাবু দুটো বিমান পাঠিয়ে গুজরাটে লোক নামিয়ে দিলেন, কোনও প্রশ্ন উঠল না! বাংলার কেউ ছিল না, কারণ আমরা কারও কাছে মাথা নত করি না।”

গুজরাটে বাঙালি শ্রমিকদের উপর বৈষম্যের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “ওরা যখন আপনাদের থাকতে দিচ্ছে না, তখন ওখানে থাকার দরকার কী? ফিরে আসুন বাংলায়। আমরা কাজের ব্যবস্থা করব। একটা রুটি থাকলে, ভাগ করে খাওয়াব।”

তিনি জানান, বর্তমানে বাংলায় দেড় কোটিরও বেশি হিন্দিভাষী পরিযায়ী শ্রমিক বসবাস করছেন। “তাদের কখনও বাংলা ছাড়তে বলিনি। বাংলা সকলকে আশ্রয় দেয়। আমরা বিভাজনের রাজনীতি করি না,”— মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁর কড়া বার্তা, “কিন্তু কেউ যদি বাংলার মানুষের পরিচয়, ঠিকানা কেড়ে নিতে আসে, তা হলে তাদের পেছু হাঁটিয়ে ছাড়ব।” বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয় যে রাজ্যের আত্মসম্মানের অংশ, তা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই গর্বে কেউ আঘাত করলে, প্রতিবাদ হবে জোরালো—আর তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না।”