Mamata On DM Meet : জেলাশাসকের বৈঠকে কী বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর?

85

ডিজিটাল ডেস্ক, ৩১ জুলাই : দুর্গাপুজো সামনে আসায় প্রশাসনিক ব্যস্ততা থাকবেই, তবে তার জেরে সরকারি প্রকল্পে যেন কোনও রকম গাফিলতি না হয়—বৃহস্পতিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছে। সেই প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, এদিন ভিডিয়ো উপস্থাপনার মাধ্যমে জেলাশাসকদের তা বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই প্রকল্পের কাজে কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। সরকারি পরিষেবার গতি ও মান বজায় রাখার ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি (Mamata On DM Meet)।

বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমস্ত জেলার জেলাশাসক। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং প্রশাসনের অন্যান্য শীর্ষকর্তারা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শুরু হওয়া এই বৈঠকে মূলত আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্প। আগামী শনিবার থেকে শুরু হতে চলেছে এই প্রকল্পের শিবির। চলবে ২ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য, সরকারি পরিষেবা এবং এলাকার সমস্যা সরাসরি বুথ স্তরে পৌঁছে দেওয়া।

বৈঠকে ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে জেলাশাসকদের বিস্তারিতভাবে বোঝানো হয়—শিবিরগুলির আয়োজন কীভাবে করতে হবে, কীভাবে সেগুলিতে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে এবং সেগুলির নিষ্পত্তি কীভাবে দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে। দফতরভিত্তিক সমস্যাগুলির সমাধানে কী পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, তাও পরিষ্কারভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের।

২১ জুলাই ধর্মতলার সমাবেশের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের নতুন সরকারি প্রকল্প—‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। এই প্রকল্পের কাঠামো অনুযায়ী, তিনটি বুথ নিয়ে গঠিত হবে একটি ‘পাড়া’, এবং প্রতিটি বুথের জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে ১০ লক্ষ টাকা। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, একেবারে বুথ স্তরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যা শোনা এবং দ্রুত তার সমাধান করা। রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। সেই অনুযায়ী, এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার ব্যয় করতে চলেছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।

বিভিন্ন বুথে স্থানীয় বাসিন্দাদের ছোট ছোট চাহিদা যেমন—স্বল্পদৈর্ঘ্যের রাস্তা তৈরি, পানীয় জল সংস্থান, গ্রামাঞ্চলে সেতু মেরামতি, স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি—এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান করা হবে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখেই এই প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মসূচিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন—পুজোর ব্যস্ততা থাকলেও এই প্রকল্প যেন কোনওভাবেই অবহেলিত না হয়।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও জেলাশাসকদের আলাদা করে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের তিনি তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যেই যেসব এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব বাড়ছে, সেখানে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। সঙ্গে অন্যান্য জেলায় আগাম সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে জানান, ডেঙ্গি ছাড়াও অন্য কোনও পতঙ্গবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।