ডিজিটাল ডেস্ক, ১৩ মে : ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতির নেপথ্যে কি আমেরিকার চাপ কাজ করেছে? কাশ্মীর ইস্যুতে কি ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা করবেন? সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই এসব প্রশ্ন উঠে আসছিল।
বুধবার, বিদেশমন্ত্রক স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে সংঘর্ষবিরতির সঙ্গে ব্যবসার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতীয় নেতৃত্বের বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও, কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ভারত সরকার জানিয়ে দিয়েছে—কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক ইস্যু ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে (MEA on Trump)।
মঙ্গলবার বিকেলে বিদেশমন্ত্রকের সচিব রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিক সম্মেলন করেন। স্বভাবতই সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন—সংঘর্ষবিরতির ক্ষেত্রে কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে ভারত? জবাবে বিদেশ সচিব স্পষ্ট করেন, “৭ মে অপারেশন সিঁদুর শুরুর পর থেকে ১০ মে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার সময় পর্যন্ত আমেরিকা ও ভারতের নেতৃত্বের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনা হয়েছে। তৎকালীন সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে বারবার পর্যালোচনা হয়েছে, তবে কোনো আলোচনায় ব্যবসার প্রসঙ্গ উঠে আসেনি।”
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত শনিবারও ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে তিনিই যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছেন। তিনি বলেন, “দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, দুই দেশ সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যথাযথ সময়ে বাস্তববোধ প্রয়োগ করায় আমি উভয় পক্ষকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।” সোমবার, তিনি আরও দাবি করেন, “পরমাণু শক্তিধর দুই দেশকে চাপ প্রয়োগ করে সংঘর্ষবিরতি নিশ্চিত করেছি। যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্যও বন্ধ হবে—এই সতর্কতা দিয়েছিলাম, যা কার্যকর হয়েছে।” তিনি আরও স্পষ্ট করেন, “আমিই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়েছি। উভয় দেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।” তাঁর এই দাবির পর সরকারকে আক্রমণ করতে শুরু করে বিরোধীরা। এমন পরিস্থিতিতে এবার স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।
বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে ভারতের অবস্থান কাশ্মীর নিয়ে অপরিবর্তিত রয়েছে। এটি ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ইস্যু, যেখানে তৃতীয় কোনো পক্ষের মধ্যস্থতা নয়াদিল্লি গ্রহণ করবে না। পাশাপাশি, তারা আরও জানিয়েছে যে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার একমাত্র বিষয় হতে পারে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরানোর প্রসঙ্গ—অন্যান্য কোনো বিষয়ে নয়।
যে কোনো দেশে ভারত-পাকিস্তানের মতো সামরিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জানানো উচিত—এটাই বরাবরের নীতি। ভারতও এই রীতি অনুসরণ করে এসেছে। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই ভারত আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং এমনকী চিনের সঙ্গেও ধারাবাহিক আলোচনায় যুক্ত ছিল। তাই নয়াদিল্লি স্পষ্ট করেছে যে আমেরিকার সঙ্গে ফোনালাপকে ভিন্ন মাত্রা দেওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই।
Comments are closed.