Mid-Day-Meal News:এ কেমন শিক্ষা ! শিক্ষাকেন্দ্রেই বিভেদ,মিড ডে মিলের হাড়ি আলাদা !

48

ডিজিটাল ডেস্ক ২৫জুনঃ মিড ডে মিলে হিন্দু আর মুসলিম ছাত্রদের হাঁড়ি আলাদা। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলি ১ নম্বর ব্লকের নাদনঘাট থানা এলাকা থেকে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৫ সাল থেকে আলাদা রান্না হচ্ছে হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিল। একথা জানতে পেরে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক আয়েশা রানি (Mid-Day-Meal News)।

ঘটনাটি কিশোরীগঞ্জ-মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়টি পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের নাদনঘাট থানা এলাকায় অবস্থিত। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ৭২ জন। শিক্ষক ও শিক্ষিকা মিলিয়ে রয়েছেন চারজন। হিন্দু-মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়ের পরিবারের ছেলে মেয়েরা এই স্কুলের শ্রেণীকক্ষে একসঙ্গে বসে শিক্ষকের কাছে পাঠ নেয়। তা নিয়ে অবশ্য কোনও বিভেদ নেই। তবে ’বিভেদ’ চরম রূপ পেয়েছে এই বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল নিয়ে। এই বিদ্যালয়ে হিন্দু-মুসলিমদের জন্য আলাদা আলাদা মিড-ডে মিল রান্নার হেঁসেল ঘর রয়েছে। সেখানে রান্নাও করেন দুই সম্প্রদায়ের রাঁধুনি। এই কথা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষও অস্বীকার করতে পারেননি।

স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কানন বর্মন জানিয়েছেন, মিড ডে মিল চালু হওয়ার পর থেকেই এই বিদ্যালয়ে এই প্রথা চলে আসছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন, ‘আমি বছরখানেক হল এখানে প্রধান শিক্ষক হয়ে এসেছি। এখানে বহু বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। এজন্য স্কুলকে বাড়তি খরচ বইতে হয়। ২ জায়গায় রান্না করতে প্রায় দ্বিগুন গ্যাস খরচ হয়। জিনিসপত্র আলাদা রাখতেও বাড়তি টাকা দিতে হয়। আমি অভিভাবকদের নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু অভিভাবকরা সহমত না হওয়ায় পারিনি।’

এই ঘটনায় মহকুমাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। সরকারি স্কুলে কী ভাবে ধর্মীয় বিভাজন চলতে পারে তার জবাব চেয়েছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ জানান, “আমি মাত্র একবছর হল এই স্কুলে এসেছি। তার অনেক আগে থেকেই স্কুলে এইভাবে মিড ডে মিল রান্না হচ্ছে। একারণে মিড-ডে মিলের খাতে দ্বিগুণ খরচা হচ্ছে। এটা যাতে বন্ধ হয়, তার জন্য বুধবার তিনি বুধবার বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের বৈঠক ডেকেছি।” এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা গণেশ গোঁসাই বলেন,“স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকাটা ঠিক নয়। সরকারী স্কুলে হিন্দু ও মুসলিম ঘরের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আলাদা করে মিড রান্না বন্ধ হোক, এটা আমিও চাই। কারণ ধর্ম নিরেপেক্ষতাই আমাদের ভারতবর্ষের গর্ব।”