Modi Talk With Iran : ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা প্রধানমন্ত্রীর, দ্রুত সংঘর্ষ থামানোর বার্তা মোদি

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ জুন : মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে ইরানের মাটিতে মার্কিন হামলার জেরে যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi Talk With Iran)। ঘটনার গভীরতা ও সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।

রবিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপের পর এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি সামনে আনেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, “ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অঞ্চলজুড়ে যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, তা নিয়ে আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমি আবেদন করেছি—সমস্ত পক্ষ যেন আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথেই সমাধানের দিকেই এগিয়ে যায়। আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এটাই একমাত্র পথ।”

ভারত এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শুরু থেকেই একটি নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। ইরান ও ইজরায়েল—উভয় দেশের সঙ্গেই ভারতের সুদৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থাকায় নয়াদিল্লি যুদ্ধ থামাতে প্রথম থেকেই দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আবেদন জানিয়েছে। তবে সময় যত এগোচ্ছে, পরিস্থিতি ততই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। রবিবার ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পরমাণু স্থাপনাগুলিতে মার্কিন বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমানের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়। মাটির গভীরে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো গুঁড়িয়ে দিতে ব্যবহার করা হয় আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। শুধু আমেরিকাকে জবাব দেওয়ার কথাই নয়, ইরান হুমকি দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানির পথ—হরমুজ প্রণালী—বন্ধ করে দেওয়ারও। ফলে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কূটনৈতিক মহল।

হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে তা ভারতের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদিও ভারত সরাসরি ইরান থেকে খুব বেশি তেল আমদানি করে না, তবুও দেশের মোট তেল চাহিদার ৮৫ শতাংশের বেশি আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ তেল এই হরমুজ প্রণালী দিয়েই ভারতে আসে। বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহন হয় এই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ দিয়ে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ইরান যদি এই প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে ভারতের বাণিজ্যে বড়সড় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। ইরাক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশগুলি থেকে আসা তেলের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হবে, যার প্রভাব সরাসরি পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফোনালাপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। যুদ্ধের আঁচে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বার্তা দেওয়ার এবং আলোচনার মাধ্যমে স্থিতাবস্থায় ফেরার আহ্বান ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টারই অংশ।