ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : ৯৩ কোটি টাকার শেয়ার বাজার প্রতারণা! ফোনে লোভনীয় মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে কলকাতার একটি সংস্থা এবং তার কর্ণধারের বিরুদ্ধে। দিল্লির এক দম্পতির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সেই সূত্র ধরেই শুক্রবার সকালে মুকুন্দপুর এলাকায় অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থাটি (Mukundapur ED Search)।
দিল্লির এক দম্পতি সেবি বা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI)-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, কলকাতার সংস্থা বিআরএইচ ওয়েলথ ক্রিয়েটর (BRH Wealth Creator)-র তরফে একাধিক ফোন পান সম্প্রতি। সেখানকার কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের লাভের আশ্বাস দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার কেনার জন্য প্ররোচনা দেন।
সংস্থাটির মূল কর্ণধার হলেন মুরুগেশ দেবসারিয়া। ২০০৪ সালে রেজিস্টার হওয়া এই কোম্পানির অফিস ছিল কলকাতার তপসিয়া এলাকায়। অভিযোগ অনুযায়ী, একটি চক্র বিভিন্ন উপায়ে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে এবং তাঁদের টার্গেট করে। সেইভাবেই দিল্লির ওই দম্পতির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। পরবর্তীতে তাঁরা বুঝতে পারেন, এক প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়েছেন।
অভিযোগে দিল্লির দম্পতি জানান, ওই সংস্থাটি প্রতারণার মাধ্যমে তাঁদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তদন্তে উঠে আসে, শুধু তাঁদেরই নয়—এই একই পদ্ধতিতে বাজার থেকে মোট প্রায় ৯৩ কোটি টাকা তছরুপ করেছে সংস্থাটি। পুরো প্রতারণার প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হত একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। সেই ব্যাঙ্কেই উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন অভিযুক্ত অ্যান্থনি, যিনি মূলত আর্থিক লেনদেন ও বিনিয়োগের “ফেস” হিসেবে কাজ করতেন।
মূল অভিযুক্ত মুরুগেশ দেবসারিয়াকে গুজরাতের বরোদা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। আরেক অভিযুক্ত অ্যান্থনির খোঁজে কলকাতার মুকুন্দপুরের একটি ফ্ল্যাটে এদিন অভিযান চালায় ইডি। সেখান থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। তবে অ্যান্থনিকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি।