ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ জুন : জি-৭ সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে কঠোর অবস্থান নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi At G7)। পাকিস্তানকে ঋণ অনুমোদনের প্রসঙ্গে সরাসরি নাম না করে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির (IMF, ADB) নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। মোদি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার পাশাপাশি সন্ত্রাসে মদতদাতা দেশকে অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়া—এই দ্বৈতনীতি গ্রহণযোগ্য নয়। একই সঙ্গে, বিশ্বদরবারে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী শক্ত অবস্থানও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জি-৭ বৈঠকে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যেখানে তিনি জোর দিলেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সার্বিক উন্নয়নের ওপর। মোদি বলেন, “বিশ্ব শান্তি ও উন্নতির জন্য আমাদের নীতি স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। যে দেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করবে, তাকে তার মূল্য চোকাতে হবে।” তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির দ্বিমুখী নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “একদিকে আমরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, অন্যদিকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা দেশকে পুরস্কৃত করা—এটা ঠিক নয়। এই দ্বৈতনীতি বন্ধ করতে হবে।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলার জবাবে ভারত চালায় অপারেশন সিঁদুর, যাতে ধ্বংস করা হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। ভারত বারবার আপত্তি জানালেও পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ হয়নি, বরং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলেছে। দুই দেশের চলমান সংঘাতের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF) পাকিস্তানকে ৮৫০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে, যা ভারত তীব্রভাবে বিরোধিতা করেছিল। এরই পাশাপাশি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB) পাকিস্তানকে ৮০ কোটি ডলার (প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) ঋণ প্রদান করে ভারতের আপত্তি উপেক্ষা করে। ভারত এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ, এবং মনে করা হচ্ছে যে জি-৭ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই ইস্যুতে নাম না করে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে তার মদতদাতাকে পুরস্কৃত করা বিশ্ব শান্তির পরিপন্থী।
শুধু সন্ত্রাসবাদই নয়, ‘গ্লোবাল সাউথ’ অঞ্চলের গুরুত্ব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশ্বনেতাদের এই অঞ্চলের উন্নয়ন ও সমস্যার দিকে আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মোদি বলেন, “ভারত ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরাকে নিজের দায়িত্ব মনে করে।” এছাড়াও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি এআই-এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ উভয় দিকই তুলে ধরেন। বিশেষ করে ডিপ ফেক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ছবি ও ভিডিও তৈরি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বিষয়টি আলোচনায় স্থান পায়। প্রধানমন্ত্রী জোর দেন প্রযুক্তির সঠিক ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের ওপর, যা ভবিষ্যতে বিশ্বকে আরও নিরাপদ ও সুসংগঠিত করতে সাহায্য করবে।