ডিজিটাল ডেস্ক ২১ অগাস্টঃ আজই ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেল নওশাদ সিদ্দিকি সহ ৯৫ জন ISF কর্মীর। বুধবার গ্রেফতার হওয়ার পর জোড়াসাঁকো থানাতেই রাত কাটান নওশাদ সিদ্দিকি। ISF-এর অন্য কর্মীরা রাত কাটান সেন্ট্রাল ডিভিশনের বিভিন্ন থানায়। পুলিশের কাজে বাধাদান, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা ও রাস্তা আটকানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বিধায়ককে। প্রথমে ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয় নওশাদ সহ প্রত্যেককে। পরে পরে সেই বন্ড মকুব করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার ধর্মতলার কর্মসূচি থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছিল হেয়ার স্ট্রিট এবং বৌবাজার থানার পুলিশ। নওশাদ-সহ ৮৪ জনকে গ্রেফতার করে হেয়ার স্ট্রিট থানা। বাকি ১১ জনকে বৌবাজার থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের মধ্যে সরকারি স্কুলের শিক্ষক, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীও ছিলেন(Naushad Siddiqi)।
আদালতে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘ধৃতদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা সরকারি কর্মী, শিক্ষক, আইনজীবী রয়েছেন। WBSEDCL-এর ইঞ্জিনিয়ার আছেন দুজন।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইএসএফ সমর্থকরা ওবিসি ইস্যুতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভ দেখাতে। রাজ্যে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আইনজীবীর অভিযোগ, পুলিশ অ্যাটাক করেছে, পাঞ্জাবি ছেঁড়া হয়েছে। তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলেও জানান আইনজীবী। শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়ার কথা বলেন।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরে নওশাদ বলেন, ‘‘এই লড়াই চলবে। জনগণ লড়াই করবে। এই লড়াই এখন সবে শুরু হয়েছে। জেলে আমাদের আটকে রাখতে পারবে না।’’ নওশাদদের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার হাওড়ার আমতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্তোষপুরে রাস্তা অবরোধ হয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের বাইরেও কয়েকশো আইএসএফ সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ভাঙড়ের বিধায়ককে বুধবার প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল।
নওশাদ জামিন পাওয়ার পর বাইরে উৎসাহী সমর্থকদের উল্লাসের ছবি দেখা যায়। তাঁরা বলেন, “ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করেছে জনগণ। গোটা বিভাগ দায়ী নয়। ভাইজানকে খুন করার চক্রান্ত করা হয়েছিল। তবে সব পুলিশ খারাপ নয়, কয়েকজন গুণ্ডামি করেছে।” আপাতত সমর্থকরা আদালতের বাইরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।
গতকাল বুধবার এসআইআর-ওয়াকফ ইস্যুতে প্রতিবাদের নামে ধর্মতলায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠল আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশের অনুমতি না নিয়েই মেট্রো চ্যানেলে ধর্নামঞ্চ তৈরির চেষ্টা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সেই মঞ্চ সরাতে গেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, এবং আইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশি অভিযোগ পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। এই ঘটনার মাঝে, ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি মাঝ রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে। ঘটনার জেরে ধর্মতলা অঞ্চলে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ধর্মতলায় আইএসএফের বিক্ষোভ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা। ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের আচমকা বিক্ষোভের জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ে এলাকার যান চলাচল। সাধারণ মানুষ পড়েন চরম দুর্ভোগে। যার জেরে কালই গ্রেফতার করা হয় নওশাদ সহ ISF কর্মীদের ।