ডিজিটাল ডেস্ক ৯ জুনঃ মোদী সরকারের দশ বছর পূর্তি হয়েছে গত বছর ২৬ মে। তখন সরকারের দশক পূর্তি দল পালন করেনি বিজেপি। মনে করা হয়, লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই ভোটে বিজেপির আসন ৩০৩ থেকে কমে ২৪০ হয়ে যায়। শরিকদের সাহায্যে সরকার গড়েন মোদী। লোকসভা ভোটের পর পদ্ম শিবিরে স্বস্তি ফেরে মহারাষ্ট্র্, হরিয়ানায় জয় হাসিল করে। তাই মোদী সরকারের তৃতীয় সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। তাই আজ অর্থাৎ সোমবার নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি। বিজেপি গোটা দেশে জুনের বাকি দিনগুলি সরকারের সাফল্য প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছে। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এক্স পোস্টে নিজেই প্রচারের অভিমুখ তৈরি করে দিয়েছেন। তাতে নরেন্দ্র মোদীর রাজনীতির শব্ধ ভাণ্ডারের দুটি শব্দকে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যা রাজনৈতিক মহলের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে। হিন্দুত্ব কেন্দ্রিক চেনা ভাষণের বাইরে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিকাশ ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব বেশি করে দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর রাজনীতি হল বিকাশবাদ,সামাজিক ন্যায়। একথায় নিজের ঢাক নিজেই পেটালেন , স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায়( NDA Govt Anniversery)।
মোদীর পোস্টে বিকাশবাদ শব্দটি এনে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ স্লোগানকে নয়া মাত্রা দিয়ে চেয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দুদিন আগেই বিশ্বব্যাঙ্ক এক রিপোর্টে জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর এগারো বছরের শাসনে ১০ কোটি মানুষের দারিদ্রমুক্তি ঘটেছে। স্বভাবতই হিন্দুত্বের তুলনায় বিকাশকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, ধারণা নানা মহলের। তার আগে প্রতিশ্রুতি পূরণের ব্যর্থতার খতিয়ান তুলে ধরে বিজেপিকে নিশানা করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন। বিজেপির আমলে দেশের সার্বিক অর্থনীতির বেহাল দশার বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি। নিজের দাবির সমর্থনে ২০২৪ সালের ভোটে বিজেপি ইস্তাহারের ১৫টি প্রতিশ্রুতি ও এক বছর পর সেগুলির রূপায়নে খামতি নিয়ে তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এক লিখিত বিবৃতিতে ডেরেক জানান, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সমস্যার সুরাহার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে গৃহস্থালির ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে, আর্থিক সঞ্চয় গত ৫০ বছরের সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে উচ্চমানের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতিও। কাজকর্মের অভাবে ২০২১ সালের পর থেকে অনেক বেশি মানুষ কৃষিকাজে নিযুক্ত হতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে ৪৬ শতাংশ কর্মীই কৃষিতে যুক্ত। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়েও বিজেপিকে নিশানা করেছেন ডেরেক।
সরকারের জন্মদিনের বক্তব্যে নাম না করে রাহুল গান্ধীকেও বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুলের লাগাতার চাপের মুখে মোদী সরকার গতমাসে কাস্ট সেন্সাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাহুলের দাবি, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অনগ্রসর শ্রেণির মানুষেরা নেই। মোদী তাঁর পোস্টে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ৬০ শতাংশ সদস্য তফসিলি জাতি, উপজাতি ও ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। অতীতে কোনও সরকারের পশ্চাৎপদ সমাজের এত প্রতিনিধিত্ব ছিল না। মোদী বলেছেন, সকলকে পাশে কাজ করাতেই তাঁর সরকার সফল।