Newtown Murder Verdict : নিউটাউনে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুন মামলায় ৬ মাসেই বিচার, দোষীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড
ডিজিটাল ডেস্ক, ২৭ অগাস্ট : নিউটাউনের লোহাপুলের ঝোপ থেকে উদ্ধার হওয়া অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অবশেষে বিচার পেল নির্যাতিতা। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে বুধবার বারাসতের পকসো আদালত নদিয়ার বাসিন্দা টোটোচালক সৌমিত্র রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে (Newtown Murder Verdict)। পাশাপাশি তাঁকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে, যখন গৌরাঙ্গনগরের বাড়ি থেকে অভিমানে বেরিয়ে যায় ১৪ বছরের কিশোরী। জানা গিয়েছে, বোনের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে সে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে এবং যাওয়ার আগে মায়ের উদ্দেশে একটি চিঠিও লিখে যায়। রাতের অন্ধকারে জগৎপুরের কাছে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বাড়ি ফেরার জন্য একটি টোটোতে ওঠে সে—যার চালক ছিল সৌমিত্র রায়। সেই রাতেই ঘটে ভয়াবহ ঘটনা, যার পরিণতিতে আজ ন্যায় পেল নির্যাতিতা।
নির্যাতিতাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টোটোয় তুলে নেয় সৌমিত্র রায়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবায়িত হয়নি। পরদিন, ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নিউটাউনের লোহাপুল খালের ধারে ঝোপ থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয় ১৪ বছরের কিশোরীর নিথর দেহ। তার পরনে ছিল একটি নীল-খয়েরি রঙের হুডি, শরীরে ছিল একাধিক আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তের দাগ। ময়নাতদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়।
ঘটনার তদন্তে নামে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সৌমিত্রকে। আদালতে পেশ করা হয় মেডিক্যাল রিপোর্ট, ডিজিটাল এবং বায়োলজিক্যাল প্রমাণ। তদন্তকারীদের দাবি, ধারাবাহিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয় সৌমিত্র। সে জানায়, কিশোরীকে নিয়ে নিউটাউনের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার পর লোহাপুল এলাকায় নিয়ে গিয়ে ঘটায় সেই নৃশংস ঘটনা।
নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা সৌমিত্র, যিনি নিউটাউনের আদর্শপল্লিতে ভাড়া থাকতেন, তাঁর বিরুদ্ধে মাত্র ছ’মাসে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং চার্জশিট গঠনের কাজ সম্পন্ন করে আদালত সাজা ঘোষণা করে। এই দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার।
বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, “একটি নিষ্পাপ প্রাণের উপর যে নির্মমতা চালানো হয়েছে, তা সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এমন অপরাধে কোনও সহানুভূতির জায়গা থাকতে পারে না।”