ডিজিটাল ডেস্ক ১৭ই জুলাইঃ বুধবার খাস কলকাতার বুকে ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক ঘটনা। নিক্কো পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড় করতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে এক যুবকের। ঘটনায় দায় কার? গাফিলতি কি পার্ক কর্তৃপক্ষের? গত ২৪ ঘণ্টায় একে একে উঠে এসেছে নানা তথ্যও। চলেছে বিতর্ক, আলোচনা, সমালোচনা(Niccopark Incident)।
বৃহস্পতিবার সামনে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। সূত্রের খবর, এদিন বেলা সাড়ে তিনটের সময় ময়নাতদন্ত করা হয় নিক্কো পার্কে দুর্ঘটনায় মৃত যুবকের। প্রায় এক ঘন্টা সময় নিয়ে ময়নাতদন্ত চলে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তার পরিবারের পরিজনরা ও প্রতিবেশী ও বন্ধুরা। যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়েছিল আরজিকর মেডিকেল কলেজে। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, যুবকের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগ জনিত। প্রাথমিক রিপোর্ট জলে ডুবে মৃত্যু হয়নি তাঁর। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে যুবকের কিডনি, লিভার, পাকস্থলী প্রয়োজনের তুলনায় বড়। পাকস্থলীতে তরল জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা মাদক দ্রব্য না হলেও কী সেটা খতিয়ে দেখার জন্য পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে, এবং একই সঙ্গে কিডনি, লিভার, পাকস্থলী, ফুসফুস বায়োপ্সি করতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে সূত্র মারফত।
সূত্রের খবর, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হৃদরোগ থেকেই এই মৃত্যু। ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দএয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ নিক্কো পার্কে ঘুরতে যান উল্টাডাঙ্গার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, নাম রাহুল, বয়স ১৮। বন্ধুদেরে সঙ্গেই এদিন সেখানে দলবেঁধে ঘুরতে যান তাঁরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি বিধাননগর অনিস সরকার বুধবারেই জানান, ‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।তদন্ত চলছে,জানা গিয়েছে, একটা সময় পরে ওই যুবক শারীরিক সমস্যা অনুভব করছিল। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়,এবং সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষানীরীক্ষা করার পর মৃত বলে ঘোষণা করেন।মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যু কারণ বলা যাবে ।’
নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান মৃত যুবক সহ মোট সাত জনে বন্ধু এসেছিল ওয়াটার পার্কে। হঠাৎই দেখা যায় ৬ বন্ধু রাহুল নামে যুবক কে নিয়ে আসছে,সে তখন অচৈতন্য অবস্থায় ছিল।কি হয়ে কেউ বলতে পারিনি।সাথে সাথে তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।চিকিৎসকরা দেখার পর তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
এর আগে, চলতি বছরের একেবারে শুরুতে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি বিনোদন পার্কে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জয় রাইডে উঠে ভয়াবহ বিপদ ঘটে তরুণীর। জয় রাইডে আটকে যায় তাঁর চুল। মারাত্মক আহত হন তরুণী। তাঁর পরিবার সেভিং কিংডম নামের ওই বিনোদন পার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ চরম অব্যবস্থার, গাফিলতির।
এর আগেও কলকাতা নিক্কো পার্কও একাধিকবার শিরোণামে উঠে এসেছে। বছর দুই আগে, ২০২৩ সাল নাগাদ পার্কে রাইড চড়াকে কেন্দ্র করে বচসা বাঁধে। অভিযোগ ওঠে, কয়েকজন যুবক মিলে বিবাদের মাঝে মারধোর করে তৎকালীন নিক্কোর অপারেশন ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র অফিসারকে। তাঁকে সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল।
এর আগে প্রায় ১৩ বছর আগে, ২০১২ সালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘোটেছিল নিক্কো পার্কে। সেবার আচমকা মাঝপথে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে জয়রাইড। আহত হন অন্তত ১৫ জন।