ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০ জুলাই : আজ, বুধবার বিকেলে ফের মহাকাশ ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনার পথে ভারত। প্রথমবারের মতো ভারত ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ নিসার (NISAR satellite) উৎক্ষেপণ হতে চলেছে (Nisar Satellite Launch)। পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে তৈরি এই উপগ্রহটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) এবং মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা (NASA)।
এবার নজর ‘নিসার’ কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের দিকে। নাসা ও ইসরোর যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই উপগ্রহটি আগামী বুধবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক পরিবর্তনের নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ১.৫ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১২,৫০০ কোটি টাকা) ব্যয়ে তৈরি নিসার কৃত্রিম উপগ্রহ। এটি মূলত ভূপৃষ্ঠ, সমুদ্র, হিমবাহ এবং অরণ্যের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করবে। যদিও গোটা প্রকল্পে ইসরোর আর্থিক অংশগ্রহণ প্রায় ৭৮৮ কোটি টাকা, তবু এই বিপুল বিনিয়োগকে ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গিয়েছে, ‘নিসার’ প্রতি ৯৭ মিনিটে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করবে। এবং মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই গোটা পৃথিবীর ভূখণ্ড ও হিমাবৃত অঞ্চলের বিস্তৃত মানচিত্র প্রস্তুত করতে সক্ষম হবে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অন্ধকার, মেঘ বা ধোঁয়ার মতো কোনও প্রতিবন্ধকতা তাকে থামাতে পারবে না—এই উপগ্রহ পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিবর্তনও নির্ভুলভাবে ধরতে পারবে।
এই সব ডেটা বিজ্ঞানী ও জলবায়ু গবেষকদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হয়ে উঠবে, আর নিসার থেকে প্রাপ্ত সমস্ত তথ্য তারা বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে হিমালয়ের হিমবাহ গলার গতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে অসমের বার্ষিক বন্যার আগাম পূর্বাভাস—সবই আরও নির্ভরযোগ্য ও দ্রুত পাওয়া যাবে। নিসারের এই বিশ্লেষণ আগামী দিনে বহু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের পথ খুলে দিতে পারে। তবে উৎক্ষেপণের পরপরই নিসার কার্যক্ষম হবে না। উপগ্রহটিকে সম্পূর্ণভাবে কার্যক্ষম করে তুলতে আনুমানিক ৯০ দিন সময় লাগবে। তারপর থেকেই এটি সক্রিয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ শুরু করবে।