Noida Dowry Case : নয়ডায় ভয়াবহ কাণ্ড! পণের জন্য এ কী ঘটল স্ত্রী-এর সাথে?

58

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৪ অগাস্ট : গ্রেটার নয়ডার সীরসা গ্রামে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী নিক্কি ভাটি পণ-নির্যাতনের শিকার হয়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। ২০১৬ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই স্বামী বিপিন ভাটি ও তার পরিবারের হাতে নিক্কি নির্যাতনের শিকার হন। দীর্ঘদিনের সহ্য করা অত্যাচার শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় (Noida Dowry Case)।

নিক্কির ছয় বছরের ছেলে ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। শিশুটি জানায়, “ওরা মায়ের গায়ে কিছু ঢেলে দেয়, তারপর চড় মেরে লাইটার দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।” এই বর্ণনা গোটা ঘটনার নির্মমতা তুলে ধরে। নিক্কিকে মারধর করে, টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে নয়ডার ফোর্টিস হাসপাতাল এবং পরে দিল্লির সাফদারজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নিক্কির বড় বোন কাঞ্চন, যিনি একই পরিবারের আরেক সদস্যকে বিয়ে করেছিলেন, তিনিও নির্যাতনের শিকার হন। তবে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে ঘটনার কিছু অংশ ভিডিও করে রাখতে সক্ষম হন, যা এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

স্বামী বিপিন ভাটি প্রথমে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্ট দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়। কিন্তু শনিবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রবিবার পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন বিপিন পালানোর চেষ্টা করলে, পুলিশ তার পায়ে গুলি করে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিক্কির মা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মেয়ের ওপর চলা নির্যাতনের কথা তারা আগেই বুঝেছিলেন। তাঁর কথায়, “আমরা দু’বার ওকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু প্রতিবারই স্বামীপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওকে ফেরত নিয়ে যায়। কিন্তু অত্যাচার থামেনি।” তিনি আরও বলেন, “মেয়ের বিশ্বাস ছিল, একদিন সব ঠিক হবে। ভাল সময় নিশ্চয়ই আসবে।”

অন্যদিকে, পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা বিপিন নিজের দোষ অস্বীকার করে জানিয়েছে, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া তো হতেই পারে। আমি কিছু করিনি। আমার কোনও অনুতাপও নেই। ও নিজেই মরেছে।”

নিক্কির নির্মম মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফুঁসছে পরিবার। তাদের স্পষ্ট দাবি, “বিপিনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হোক, তাকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।” তারা চায়, এই নৃশংস ঘটনার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনও মেয়ে এমন পরিণতির শিকার না হয়।