ডিজিটাল ডেস্ক, ৩ মে: পহেলগাঁও হামলার পর প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা (Modi Abdullah Meet)। শনিবার বিকেলে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, ৭ লোককল্যাণ মার্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এই সাক্ষাৎকারে কী আলোচনা হয়েছে, তা সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে সূত্রের খবর, পহেলগাঁও ঘটনার পর জম্মু ও কাশ্মীরে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে।
পহেলগাঁও হামলার পর টানা নয়দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে পাকিস্তান। বিনা উসকানিতে ভারতীয় সেনাঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ছে তারা। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাও। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিও মোদী ও ওমর আবদুল্লার বৈঠকে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। কী ভাবে উপযুক্ত প্রত্যাঘাত করা হবে, সেই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, কাশ্মীরে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাও বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে।
সম্প্রতি পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এক দিনের বিশেষ অধিবেশন বসে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায়। সেই অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারার দায় স্বীকার করে নেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তিনি বলেন, “পর্যটকদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানো আমার দায়িত্ব ছিল। আয়োজক হিসাবে সে দায়িত্ব আমি পালন করতে পারিনি। নিহতদের পরিবারের কাছে আমি কী ভাবে ক্ষমা চাইব, তা বুঝে উঠতে পারছি না। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মতো উপযুক্ত ভাষাও নেই।”
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক-সহ মোট ২৬ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যেই প্রেক্ষাপট তৈরি হয়, গত বছর অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় আসার। সেই নির্বাচনে ওমর আবদুল্লাদের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া। যদিও পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর ডাকা বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী ওমর স্পষ্ট জানান, “২৬টি লাশের উপর দাঁড়িয়ে আমরা পূর্ণ রাজ্যের দাবি করব না।” সেই ভাষ্যেই হামলার ভয়াবহতার প্রেক্ষিতে সংবেদনশীল রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।
Comments are closed.