ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ অগাস্ট : আমেরিকার মাটি থেকে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির (Pakistan Threatened India Of Nuke War)। সম্প্রতি একটি নৈশভোজে যোগ দিয়ে মুনির বলেন, পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি তাদের নিরাপত্তা বিপন্ন হয়, তবে তারা শুধু নিজেরাই নয়, অর্ধেক বিশ্বকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে।
তিনি আরও দাবি করেন, ভারতের দিকে তাক করে ছোড়ার জন্য পাকিস্তানের মিসাইলের কোনো ঘাটতি নেই। তাঁর এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে, বিশেষ করে যখন উপমহাদেশে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
এই প্রথমবার আমেরিকার মাটি থেকে তৃতীয় কোনও দেশের বিরুদ্ধে পরমাণু হামলার হুমকি শোনা গেল। রবিবার, ফ্লোরিডার ট্যাম্পায় শিল্পপতি আদনান আসাদের আয়োজিত এক নৈশভোজে গিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির বলেন, “আমরা একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি দেখি যে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছি, তাহলে অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়েই ধ্বংস হব।”
যদিও মুনির সরাসরি ভারতের নাম করেননি, তবু আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই হুঁশিয়ারির লক্ষ্য মূলত ভারতই। বিশেষ করে, পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়ে এসেছে, আর মুনিরের মন্তব্য সেই ধারাকেই আরও উস্কে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুধু পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারিই নয়, সিন্ধু জলচুক্তি নিয়েও ভারতের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আগ্রাসী মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ফ্লোরিডার ট্যাম্পায় আয়োজিত ওই নৈশভোজ থেকে তিনি বলেন, “আমরা দেখব, ভারত কবে নতুন বাঁধ নির্মাণ করে। ওদের বাঁধ তৈরি হলেই একসঙ্গে ১০টি মিসাইল ছুড়ে তা গুঁড়িয়ে দেব। সিন্ধু নদ ভারতের সম্পত্তি নয়। আমাদের কাছে মিসাইলের কোনও অভাব নেই—এই কথাটা মনে রাখবেন।”
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও হামলার পরপরই ভারত সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছিল, যার ফলে পাকিস্তানে ব্যাপক জলসংকট তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই মুনিরের এই মন্তব্যকে জলসম্পদ ঘিরে ভারত-বিরোধী মনোভাবের নতুন ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আমেরিকা সফরে গেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। এইবার তিনি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিল্লার অবসর গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমেরিকায় পাড়ি দেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই জেনারেল কুরিল্লা অতীতে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় পাকিস্তানের ভূমিকাকে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছিলেন।
এমন এক সফরেই মুনির এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের বিরুদ্ধে—যে দেশকে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। ফলে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।