ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ মে: পহেলগাঁও হামলার ১২ দিন কেটে গেলেও উত্তেজনা থামছে না কাশ্মীরে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর (India Pakistan Cease Fire Violation)। শনিবার রাত থেকে ফের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ চালায় পাক সেনা। তার উপযুক্ত জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি টানা দশম দিন, যখন বিনা প্ররোচনায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। পরিস্থিতি ঘিরে সীমান্তে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
ভারতীয় সেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ৩ মে রাত থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ করেছে পাকিস্তান। ছোট বন্দুক দিয়ে লাগাতার গুলিবর্ষণ করা হয়। মূলত কুপওয়ারা, নৌসেরা, সুন্দেরবানি, উরি এবং আখনুর সেক্টরে গুলি চালায় পাক সেনা। যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। তবে দুপক্ষের গুলিবর্ষণে কোনও হতাহতের খবর নেই। পহেলগাঁও হামলার পর গত ২৪ মে প্রথম সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তান। তারপর প্রতিদিনই নিয়ম করে একই কাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।
লাগাতার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন নিয়ে গত মঙ্গলবারই পাকিস্তান সেনাকে হটলাইনের মাধ্যমে কড়া বার্তা দেয় ভারতীয় সেনা। দুই দেশের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে সরাসরি এই আলোচনায় ইসলামাবাদকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, সীমান্তে সংঘর্ষের বিষয়ে যেন তারা সংযত থাকে ও চুক্তির শর্ত মেনে চলে। তবুও পাকিস্তানের উসকানিমূলক আচরণে কোনও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না—বরং তারা লাগাতার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে, যা সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।
পহেলগাঁও হামলার পর সময় যত গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে দিল্লির তৎপরতা। ওই নারকীয় হিন্দু নিধনের ঘটনার পর মোদি সরকারের মূল লক্ষ্য এখন দু’টি— জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসের শিকড় সম্পূর্ণভাবে উপড়ে ফেলা এবং সন্ত্রাসে মদত দেওয়া পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়া। এই প্রেক্ষাপটেই শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে এক গোপন বৈঠক করেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে। প্রায় ৩০ মিনিটের রুদ্ধদ্বার সেই বৈঠকে পহেলগাঁও হামলার পরবর্তী নিরাপত্তা পরিস্থিতি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যদিও আলোচনার নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ওমরের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন নৌসেনা প্রধানের সঙ্গেও। একদিকে মোদির একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, অন্যদিকে সীমান্তে অব্যাহত পাকিস্তানের উসকানিমূলক কার্যকলাপ— পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।