Panskura Child Death : চুরির অপবাদ, মারধরে আত্মঘাতী পাঁশকুড়ার কিশোর!

7

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ মে : সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাস একটি দোকান থেকে চিপসের প্যাকেট নেওয়ার জেরে ‘চুরির’ অভিযোগে অপমানিত হয়। অভিযোগ, এই অপমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। শেষে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে ওই কিশোর (Panskura Child Death)! সূত্রের খবর, একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে, যাতে সে লিখে রেখে গেছে, সে চুরি করেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে সেই নোট।

পাঁশকুড়া থানার গোসাইবেড় গ্রামে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন, এবং পাঁচজনকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিত এখনো পলাতক রয়েছে।

এলাকাবাসীর মতে, রবিবার দুপুরে কৃষ্ণেন্দু গ্রামের শুভঙ্কর দীক্ষিতের খাবারের দোকানে গিয়েছিল চিপস কিনতে। পরিবারের দাবি, দোকানে কাউকে না পেয়ে বাইরে রাখা একটি প্যাকেট নিয়ে সে ফেরার পথে ছিল। সেই সময় শুভঙ্কর তাকে সাইকেলে যেতে দেখে ধাওয়া করে এবং জনসমক্ষে চুরির অভিযোগ এনে আটকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই কিশোরকে বাজারের মাঝে কান ধরে ওঠবোস করানো হয়, পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হতে হয় তাকে।

মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পর, কৃষ্ণেন্দু অপমানের ভার সহ্য করতে না পেরে ঘরে ঢুকেই কীটনাশক পান করে। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান, তবে শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শুভঙ্কর দীক্ষিত পলাতক। সোমবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণেন্দুর মৃতদেহ নিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা, যা ক্রমেই তীব্র হয়ে ওঠে। পুলিশের উপস্থিতিতে জনতার সঙ্গে বচসার সৃষ্টি হয়, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে, যার ফলে পাঁচজন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়। এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, শুভঙ্কর দীক্ষিত ২০১৩ সাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করে আসছেন। পাশাপাশি, তিনি ও তাঁর দাদা একসঙ্গে মিষ্টি ও ফাস্টফুডের দোকান পরিচালনা করেন। ওই দোকান থেকেই চিপস নেওয়ার ঘটনায় কৃষ্ণেন্দুকে অপমানিত হতে হয়েছিল।

ঘটনার পর থেকেই শুভঙ্কর দীক্ষিত পলাতক, পুলিশের প্রাথমিক নিষ্ক্রিয়তা এবং লাঠিচার্জের ঘটনায় বাড়ছে প্রশ্নের তালিকা। কেন এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি? এটি কি শুধুমাত্র একটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ছিল, নাকি সত্যিই শুভঙ্করের আক্রমণাত্মক মনোভাবই এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য দায়ী? পুলিশ জানিয়েছে, তারা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে বিস্তারিত তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

Comments are closed.