বড় কিছু ঘটতে চলেছে? প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হাই প্রোফাইল বৈঠক

25

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৯ এপ্রিল: সোমবারের পর টানা দ্বিতীয় দিন, মঙ্গলবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবন ৭, লোককল্যাণ মার্গে অনুষ্ঠিত হল একটি উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক। এই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান এবং সেনা, নৌ ও বায়ুসেনার প্রধানরা।

মঙ্গলবার পহেলগাঁও হামলা এবং জম্মু-কাশ্মীরের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘিরে পৃথকভাবে দুইটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ৭, লোককল্যাণ মার্গে ডাকা জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা। গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরে ভিত্তি করে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতেই এই বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও তাঁর দফতরে শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে পৃথক এক বৈঠক করেন, যেখানে বর্তমান পরিস্থিতির উপর বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর, মঙ্গলবার ফের নিজের বাসভবনে কেন্দ্র ও সেনার শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, এই বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী আরও একটি বৈঠক করতে পারেন, যা হবে রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী। পাশাপাশি, সেই আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়েরও উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। একই দিনে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিরও পৃথক একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন, যার মধ্যে ছিলেন ২৫ জন ভারতীয় ও এক জন নেপালি নাগরিক। ওই নৃশংস ঘটনার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম অবনতির পথে গিয়েছে। প্রথমে হামলার দায় স্বীকার করেছিল ‘লশকর-ই-তইবা’র ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ), যদিও পরে তারা সেই দায় অস্বীকার করে। তবু, ভারত শুরু থেকেই এই হামলার পিছনে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ তুলে আসছে।

ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ভারত। স্থগিত করা হয় ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। পাশাপাশি, নয়াদিল্লি দাবি করেছে, পহেলগাঁও হামলায় পাকিস্তানি জঙ্গিদের সরাসরি হাত রয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তান তাদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে ঘটনার ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’-এর দাবি জানায়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামাবাদ ভারতীয় উড়ানগুলির জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।