Purnam Shaw talked with Wife : দেশে ফিরে পূর্ণম ভিডিও কল করলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে

7

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৪ মে : পাকিস্তানে আটক স্বামীর মুক্তির জন্য হুগলি থেকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী ছুটে গিয়েছিলেন হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় বিএসএফের সদর দফতরে এবং স্বামীর কর্মস্থলেও। তবুও দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কাটছিল না উদ্বেগ। বিনিদ্র রাতগুলো পেরিয়ে অবশেষে স্বস্তির খবর এল—বুধবার পাক রেঞ্জার্সের হাতে আটক রিষড়ার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউকে মুক্তি দিল পাকিস্তান। সকালে অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে তিনি পৌঁছলেন পঠানকোটে। ফিরোজপুরের ২৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের এই কনস্টেবল কর্মস্থলে পৌঁছেই ভিডিয়ো কলে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন।

২১ দিন পর অবশেষে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে আশঙ্কার কালোমেঘ সরে গেছে রজনীর মন থেকে। আবেগে কেঁদে ফেলেন তিনি—তবে এ কান্না স্বস্তির, আনন্দের। দুই হাতে মুখ চাপা দিয়ে রজনী বলেন, ‘‘ভিডিও কলে কথা হয়েছে। একমুখ দাড়ি হয়ে গেছে। বলল—টেনশন কোরো না, আমি ঠিক আছি। দাড়ি কাটতে হবে, পরে কথা বলছি।’’ রজনী আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁদের খোঁজ নিয়েছেন এবং উদ্বেগ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন (Purnam Shaw talked with Wife)।

২৩ এপ্রিল, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরদিন, পঠানকোটে কর্মরত অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করে গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। সেই সময় পাক রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ হয় এবং সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে পহেলগাঁও হামলার জেরে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে, যার ফলে ভারত-পাকিস্তান একাধিক ফ্ল্যাগ মিটিং করলেও পূর্ণমের মুক্তি হয়নি।

সংঘর্ষবিরতির পরে আশা জাগে, আর বুধবার অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটে। সকাল সাড়ে ১০টায় অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরলেন হুগলির বাসিন্দা পূর্ণমকুমার ওরফে পিকে। পরিবারের কাছে এই খবর পৌঁছাতেই উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে গোটা বাড়ি। স্ত্রী রজনী জানান, তাঁর স্বামীর মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি সুস্থ রয়েছেন। কর্মস্থলে ফিরে তিনি ওখান থেকেই ভিডিয়ো কল করেছিলেন।

রজনীর মুখে হাসির ঝলক ফুটে ওঠে। তিনি আবেগভরে বলেন, ‘‘বললেন, ‘টেনশন কোরো না, আমি একদম ঠিক আছি।’ ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করলেন। আমি বললাম, ‘ও বাইরে গেছে। আমার ফোন খারাপ হয়ে গেছে, আমি শ্রীরামপুর থেকে হয়ে আসছি।’ তখন উনিও বললেন, ‘দাড়ি বড় হয়ে গেছে, শেভ করে খাবার খেয়ে আসছি। দুপুর ৩টায় আবার ফোন করব।’’

রজনী জানান স্বামীর মুক্তির খবর আগেই দিয়েছিলেন বিএসএফের কর্তারা। তাঁর কথায়, ‘‘কতটা খুশি হচ্ছে, বোঝাতে পারব না। আমার সিঁদুর ফিরে এসেছে। পুরো দেশ ওঁর পাশে ছিল। সকলকে আমার অন্তর থেকে সকলকে ধন্যবাদ। জয় হিন্দ! জয় ভারত।’’

Comments are closed.