ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ জুলাই : ৪২ দিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে বাড়ি ফিরল সন্তোষপুর আক্রার কারখানায় নির্যাতনের শিকার হওয়া নাবালক (Rabindranagar Minor Return)। অভিযোগ, তাকে দীর্ঘদিন আক্রার একটি বাড়িতে আটকে রেখেছিল ওই কারখানারই এক কর্মী। বুধবার সন্ধ্যেবেলায় ইসলামপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে সে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ গিয়ে নাবালককে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
২৮ মে থেকে নিখোঁজ ছিল ওই নাবালক। অভিযোগ, মহেশতলার একটি জিনস ধোলাই কারখানায় তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ শক। সেই ঘটনার পর থেকেই তার কোনও খোঁজ মেলেনি।
সম্প্রতি ফিরে আসা কিশোর জানায়, তাকে আক্রার একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। কোনওমতে জানালার গ্রিল খুলে পালাতে সক্ষম হয় সে। তারপর স্থানীয় একটি স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে পৌঁছায় শিয়ালদহ। সেখান থেকে একটি দূরপাল্লার ট্রেনে চেপে বুধবার ভোরে নামে কিষানগঞ্জে। সেখান থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার হেঁটে বিকেল চারটে নাগাদ মাটিগুন্ডা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছয়। পরে এক গ্রামের বাসিন্দার সাইকেলে চড়ে নিজের বাড়ি ফেরে।
এই ঘটনায় ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস জানান, নাবালককে আপাতত ইসলামপুর থানার সেফ কাস্টডিতে রাখা হবে। রবীন্দ্রপুর থানার পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনকেও জানানো হবে। তার মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণের জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হবে। এরপরই বোঝা যাবে সে ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মগোপন করেছিল, না কি ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে আরও কিছু।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার একটি জিনস ধোলাই কারখানায় কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ছ’ঘরিয়ার এক কিশোর। অভিযোগ, তাকে দুই হাত-পা উল্টে ধরে ইলেকট্রিক শক দিয়ে অত্যাচার করা হয়। সেই মর্মান্তিক ঘটনার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় ওই কিশোর। তাকে খুঁজে পেতে পরিবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণে একাধিকবার আন্দোলনও করে। অবশেষে ৪২ দিন পর বুধবার সে বাড়ি ফিরতেই স্বস্তি ফেরে পরিবারের মধ্যে। বৃদ্ধ মা-বাবার চোখেমুখে ফুটে ওঠে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফিরে পাওয়া শান্তির হাসি। খবর পেয়েই ইসলামপুর থানার পুলিশ ওই কিশোরের বাড়িতে পৌঁছয় এবং সন্ধ্যায় তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং তদন্তে নতুন কিছু উঠে আসতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।