Rajya Sabha MP Nomination : কাসভকে ফাঁসিতে ঝোলানো আইনজীবী এবার রাজ্যসভায়, আর কারা পেলেন রাজ্যসভার টিকিট?

14

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৩ জুলাই : লোকসভা নির্বাচনে সফল না হলেও এবার রাজ্যসভায় যাচ্ছেন মুম্বই হামলার মূল চক্রী আজমল কাসভকে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানোর পিছনে থাকা আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য হিসেবে রাজ্যসভায় জায়গা পেলেন তিনি। শুধু নিকমই নন, তাঁর সঙ্গে রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, সমাজসেবী সি সদানন্দন মাস্টার এবং বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈনও (Rajya Sabha MP Nomination)।

রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত চার সদস্যের নাম রবিবার সকালে ঘোষণা করল রাষ্ট্রপতি ভবন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দেশের চারজন বিশিষ্ট নাগরিককে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত করেছেন বলে জানানো হয়েছে। মনোনীতদের তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। যাঁরা মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁরা হলেন—প্রখ্যাত আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, কেরলের সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ শ্রী সদানন্দন মাস্টার, প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এবং বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই মনোনয়নের মাধ্যমে সমাজের নানা স্তর ও ক্ষেত্রকে প্রতিনিধিত্ব করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। d

২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত আজমল কাসভকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করানোর মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন যিনি— সেই উজ্জ্বল নিকম এখন রাজ্যসভার সদস্য। শুধু কাসভই নয়, মুম্বইয়ের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, গুলশন কুমার হত্যাকাণ্ড, প্রমোদ মহাজন হত্যার মতো একাধিক হাইপ্রোফাইল মামলায় যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে লড়লেও জয় পাননি। তবে একজন আইনজীবী হিসেবে তাঁর দীর্ঘ ও উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এবার রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য হিসেবে সংসদে পা রাখছেন উজ্জ্বল নিকম।

প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রশাসনিক দক্ষতা ও কূটনৈতিক বিচক্ষণতার জন্য বহুবার প্রশংসিত হয়েছেন। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করার কথা হলেও শেষ পর্যন্ত সেই টিকিট পান রাজু বিস্তা। তবে এবার রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে সরাসরি রাজ্যসভায় জায়গা পেলেন শ্রিংলা। জি২০-তে ভারতের নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশাসনে তাঁর অবদানকেই সংসদীয় স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

কেরলের সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ সি. সদানন্দন মাস্টার, যিনি এক রাজনৈতিক হামলায় নিজের দুই পা হারিয়েও থেমে থাকেননি, এবার রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছেন। শিক্ষা ও সমাজ uplift-এর লক্ষ্যে তিনি বছরের পর বছর গ্রাম থেকে গ্রামে ঘুরে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিয়েছেন। কেরলে বিজেপির একমাত্র প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনওই তাঁর সংকল্প ও সামাজিক দায়বদ্ধতাকে দমাতে পারেনি। তাঁর এই অদম্য জীবনসংগ্রাম এবং সমাজে ইতিবাচক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই এসেছে সংসদের এই সম্মান।

জাতীয় স্তরে খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন মূলত মধ্যযুগ ও ঔপনিবেশিক ভারতের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে গবেষণা করেছেন। ‘রাম ও অযোধ্যা’ নিয়ে তাঁর গবেষণা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ২০২০ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ-এ সিনিয়র ফেলো হিসেবে যুক্ত। এবার রাজ্যসভায় মনোনয়নের মাধ্যমে তাঁর গবেষণা, জ্ঞান ও মেধাকে সংসদীয় স্বীকৃতি দিল রাষ্ট্রপতি।