ডিজিটাল ডেস্ক ৯ই অগাস্টঃ অভয়ার সঙ্গে ঘটা নৃশংসতার বর্ষপূর্তীতে শুক্রবার রাত দখলের ডাক দিয়েছিল WBJDF। সেই মতো গতকাল রাত ৯টায় কলেজ স্কোয়ার থেকে মশাল মিছিল বের করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই মিছিলের আন্দোলন থেকে উঠে আসে স্লোগান তার সঙ্গে এও শোনা যায় থিতিয়ে পড়ার পিছনের কারণ,সংবাদমাধ্য়মে সেভাবে হয়তো খবর দেখানো হয়নি, তাই হয়তো মনে হচ্ছে, আন্দোলন থিতিয়ে গিয়েছে । সাধারন মানুষ হয়তো তাদের নিজের কাজে ফিরে গেছে রুটি – রুজির তাগিদে। ঠিক একবছর আগে আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। যার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল নাগরিক সমাজ। গত বছর ১৪ অগস্ট অরাজনৈতিক ‘রাত দখল’ কর্মসূচির স্বতঃস্ফূর্ততায় ছিল না দলীয় রাজনীতির ছোঁয়া। কিন্তু এ বছর ১৪ অগস্ট বিজেপি এবং সিপিএম-দুই বিরোধী দলই রাত দখলের ডাক দিয়েছে। শুক্রবার আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন জেলায় মিছিল করেছে , সমাবেশ করে সিপিএমের ছাত্র এবং যুব সংগঠনও। কংগ্রেসও সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযান করে এই আবাহেই(RG Kar News)।
এদিনের মিছিলে শ্যামবাজার পৌঁছনোর পর প্রতিবাদীদের তরফে এক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিলেন অভয়ার বাবা-মা। মঞ্চ থেকে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি সরাসরি সিবিআইকে নিশানায় নেন অভয়ার বাবা। তিনি বলেন, “সিবিআই বলছে ৪ দিন পর আমরা মামলা পেয়েছি ৪ দিনে সব ধুয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে। গত পরশু আমরা দিল্লি ও গত কাল সিবিআই অফিসে গিয়েছিলাম। ওরা ৯৩টা ফরেনসিক রিপোর্ট দিয়েছিল। এই ৯৩টা রিপোর্টে কী তথ্য লুকিয়ে রয়েছে তাঁরা সব জানেন তবে তাঁরা চোখ বন্ধ করে আছেন। কিছু বলবেন না। কংগ্রেসের অভিযোগ, আরজি করের ঘটনায় সিবিআইও প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে পারেনি।
WBJDF সহ অনিকেত-আসফাকুল্লাদের বক্তব্য——-
আন্দোলনকারী চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইঞা বলেন, “কোনও আন্দোলনই একইভাবে একই আঁচে জ্বলতে পারে না। কিন্তু এখনও মানুষের মনে আন্দোলনের আঁচ রয়েছে। প্রতিবাদ জারি থাকবে।” আন্দোলনকারী অনিকেত মাহাতো বলেন, “নবান্ন অভিযানে সাংগঠনিকভাবে আমরা থাকছি না। তবে কেউ যদি যেতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই ন্যায়বিচারের দাবিতে যেতে পারেন।”
WBJDF-এর আন্দোলনকারীদের বক্তব্য এই আন্দোলনটি থিতিয়ে পড়ার পিছনের কারণ,সংবাদমাধ্য়মে সেভাবে হয়তো খবর দেখানো হয়নি, তাই হয়তো মনে হচ্ছে, আন্দোলন থিতিয়ে গিয়েছে । সঙ্গে জুনিয়ার ডাক্তাররা এও বলেছেন যে কাতারে কাতারে মানুষ নামচ্ছিলেন না, সেটা স্বাভাবিক। কারণ মানুষকে তো সাধারণ জীবনযাপনে ফিরতে হবে, রুজি রুটির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে আজ যখন ফের রাতদখলের সময় এল, এত মানুষ এসেছেন। সেটাই প্রমাণ করছে, আন্দোলন থিতিয়ে যায়নি। এক আন্দোলনকারী বলেন, “লড়াই জারি থাকবে। কারণ এখনও বিচার আমরা পাইনি।”
গত বছরের মতো, এবারও মিছিলে পা মেলাতে দেখা গেল অভিনেত্রী দেবলীনা। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে এবারের এই ‘রাত দখলের’ কমসুচিতে এদিন দেখা গেল না অন্যান্য তারকাদের পা মেলাতে। কিন্তু কেন ? বহু তারকাদের বক্তব্য তাঁরা কর্মক্ষেত্রে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন, সেটাই হয়তো মূলত কারণ।
গতবছর ৮ অগস্ট। কলকাতার অন্যতম সরকারি মেডিক্যাল কলেজ আরজিকরে টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটির পর গভীর রাতে ‘চেস্ট ডিপার্টমেন্ট’-এর সেমিনার হলে বিশ্রামে গিয়েছিলেন ৩১ বছরের এক ডাক্তারি ছাত্রী। পরের দিন সকাল ৯ অগস্ট, সেখান থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর রক্তাক্ত দেহ। ময়নাতদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য— যৌন নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তরুণীকে।
অভয়ার মার বক্তব্য —–
সভামঞ্চ থেকে অভয়ার মা বলেন, “আর জি করের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে অপরাধীরা। চেস্ট মেডিসিনের কয়েকজন এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এই রাত দখলে রাত দখলের কেউ নেই। কেন নেই তাদের কেউ? বিজেপি আজ, শনিবার পথে নামছে। তবে পতাকা ছাড়া। তারা নবান্ন অভিযান করবে। নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাব এই কর্মসূচির ডাক দিলেও আয়োজন যে বিজেপি-ই করবে, তা ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।