RG Kar Parents Against CBI : রাত দখলের প্রাকাল্লে সিবিআই-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা

58

ডিজিটাল ডেস্ক, ৮ অগাস্ট : দিল্লি গিয়ে সিবিআই ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করেও কোনও ফল মেলেনি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ-কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকায় গভীর হতাশা প্রকাশ করলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ফেরার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা (RG Kar Parents Against CBI)।

সিবিআইকে সরাসরি নিশানা করে তাঁরা বলেন, “সিবিআই ডিরেক্টর নিজেই বলছেন, এই মামলা ছেড়ে দেবেন। ওরা পুরোপুরি ভুয়ো (বোগাস)।” তদন্তে গড়িমসি ও উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ পরিবার দাবি করে, বিচার পাওয়ার আশাই যেন ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।

প্রসঙ্গত আর জি কর হাসপাতালে গত ৯ আগস্ট ২০২৪ জুনিয়র ডাক্তারের উপর পাশবিক অত্যাচার করে খুন করার আজকে এক বছর পূর্ণ হল ।
গতকালই নির্যাতিতা নিহত তরুণী ডাক্তারের বাবা মা মধ্যরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে দিল্লি থেকে ফিরে সিবিআই এর তদন্তের উপর তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে ।

যেহেতু দিল্লি থেকে মধ্যরাতে নির্যাতিতা নিহত তরুণী ডাক্তারের বাবা মা ফিরেছেন তাই সোদপুরের নিজেদের বাড়িতে মধ্যরাতে না ফিরে কলকাতার আত্মীয়ের বাড়িতেই থেকে গেছেন এবং সেখান থেকেই কলকাতার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থাৎ আজকে সারাদিন জুনিয়র ডাক্তারদের কলকাতার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা যাচ্ছে , সুত্র মারফত ।

নির্যাতিতার বাবা সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সিবিআই-এর কাছে একটাও প্রশ্নের জবাব নেই। কে ধর্ষণ করল, কোথায় করল, কেন করল—একটিও তথ্য দিতে পারেননি ডিরেক্টর। আদালতের নির্দেশে যে সংস্থা তদন্ত করছে, তাদের এমন মনোভাব একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।”

তিনি আরও জানান, সিবিআই ডিরেক্টর নিজেই বলেছেন যে তাঁরা এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে চান, এবং ওই মন্তব্য আদালতে গিয়ে জানাতে বলেছেন। এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবার কটাক্ষ, “১৪০ কোটির দেশের মানুষ যাঁদের উপর আস্থা রাখেন, সেই সংস্থা যে কতটা ‘বোগাস’, তা নিজে চোখে দেখে বুঝলাম।”

পাশাপাশি অভয়ার মা বলেন, “আমরা দিল্লিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তারা থেকে একটি অ্যাওয়ার্ড পাই, সেটি ছিল নারী শক্তি অ্যাওয়ার্ড। যদিও আমি সেটি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ফেরত দিক আমি জানাই যেদিন আমার মেয়ে ন্যায় বিচার পাবে সেদিনই আমি এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করব। উনিও আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন আপনি ন্যায় পাবেন। আমরা কতগুলো কোশ্চেন একটা প্লেকার্ডে লিখে সিবিআর হাতে তুলে দিয়েছিলাম এবং পিছনে লেখা ছিল সিবিআই স্পাইনলেস।” যদি পরবর্তীতে সেটি ফেরত দেওয়া হয়। সিবিআই এর দাবি তাদের তারা মেরুদণ্ডহীন নয়।

এক বছর আগের সেই দিনের কথা স্মরণ করে মা বলেন, “মায়ের অনুভূতি কখনই ভোলা যায় না মেয়ে যখন ডিউটিতে গিয়েছিল আমি তখন খাইয়ে দিয়েছিলাম। রোজ আমার এই ডিউটি ছিল। ও ভোর চারটে ঘুমোতে যেত আমি তখন ঘুম থেকে উঠতাম। ও সমস্ত কাজ আমি করে দিতাম। এক গ্লাস জলও ও নিজে নিয়ে খেত না। কারণ হসপিটালে অনেক কাজ।

এছাড়াও সিবিআইয়ের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অভয়ার মা জানান “সিবিআই কোন কাজ করবে না আমাদের রাস্তাতেই আন্দোলন করতে হবে। আদালতে আমাদের লড়াই চলবে। এর পিছনে অবশ্যই রাজনৈতিক চাপ আছে। আর জি করে মেডিকেল কলেজের দুর্নীতির সমস্তটাই মেয়ে জানত, আমরাও জানতাম। ওর কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমার মেয়ে বলেছিল আমি মেধার জোরে সুযোগ পাব, গোল্ড মেডেল পাব। আসলে এটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল আমার মেয়ে। সেটাই বড় ভুল ছিল।”

শুধু সিবিআই ডিরেক্টরের সঙ্গেই নয়, নির্যাতিতার বাবা-মার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করার পরিকল্পনা ছিল। তবে সময়ের অভাবে সেই সাক্ষাৎ সম্ভব হয়নি। এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “ওরা সোমবার পর্যন্ত থাকতে বলছিল। কিন্তু শনিবার আমাদের নবান্ন অভিযান রয়েছে, তাই সোমবার পর্যন্ত থাকা সম্ভব হয়নি। তবে অমিত শাহ যদি পরে সময় দেন, আমরা অবশ্যই আবার যাব।”