Sealdah Court Slams CBI : আরজি কর মামলায় সিবিআইকে ভর্ৎসনা আদালতের! ‘সিবিআইয়ের অবস্থা শোচনীয়’ বলে কটাক্ষ!

11

ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ জুলাই : আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) নির্যাতিতার বাবা-মা ঘটনাস্থলে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেই আর্জির বিরোধিতা করেনি সিবিআই। কিন্তু বুধবার শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court) শুধু তাঁদের আবেদন খারিজই করেনি, বরং সিবিআইকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করে (Sealdah Court Slams CBI)।

আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নিজেদের তদন্তের ওপরই যেন ভরসা নেই। আদালতের কটাক্ষ, তদন্তে যদি স্বচ্ছতা থাকে, তবে ঘটনাস্থলে নির্যাতিতার পরিবার যাওয়ায় আপত্তি কোথায়? সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলে আদালত।

এই প্রসঙ্গে বিচারক মন্তব্য করেন, “সিবিআইয়ের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তারা নিজে একটি তদন্তকারী সংস্থা হয়েও কেন এই আবেদনের বিরোধিতা করল না, তা বোধগম্য নয়। এই মামলায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত এখনও চলছে, এবং সেই প্রক্রিয়ায় একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাহলে তাঁদের গ্রেফতারের কারণ কী? সিবিআইয়ের এমন নিষ্ক্রিয় ও অস্পষ্ট অবস্থান সত্যিই অবাক করার মতো।”

নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছিলেন, ‘লাস্ট সিন থিওরি’ (Last Seen Theory) অনুসারে এই মামলার তদন্ত হয়নি। সেই কারণেই তাঁরা ঘটনাস্থল বা ‘প্লেস অফ অকারেন্স’ (Place of Occurrence) নিজে পরিদর্শন করতে চান। শুধু তাই নয়, পরিবারের তরফে একটি বিশেষজ্ঞ দল নিয়েও ঘটনাস্থলে যেতে চাওয়া হয়। প্রথমে এই সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, বিষয়টি নিম্ন আদালতে তোলা হোক। সেইমতো, শিয়ালদহ আদালতে শুনানি হয়। কিন্তু বুধবার আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তোলে আদালত।

সিবিআইয়ের প্রতি আদালতের ক্ষোভ এখানেই থেমে থাকেনি। আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলার পাশাপাশি, হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মামলাও চলছে। সেই মামলায় গ্রেফতার হলেও, তাঁরা একটি ক্ষেত্রে জামিন পেয়ে যান। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক স্পষ্টভাবে মন্তব্য করেন, সিবিআই সময়মতো চার্জশিট জমা না দেওয়াতেই ওই দুই অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। এতে তদন্ত প্রক্রিয়ার গাফিলতি স্পষ্ট। অবশেষে, নির্যাতিতার পরিবারের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আর্জি খারিজ করে দিয়ে আদালত জানিয়ে দেয়—আইনের কোনও ধারা অনুযায়ী এমন অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। নির্যাতিতার পরিবারও প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থার উপর অনাস্থা প্রকাশ করে এসেছে। তাদের অভিযোগ, তদন্তে গাফিলতি রয়েছে। সিবিআই চার্জশিট দাখিল করতে দেরি করায় আর্থিক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পান। যদিও অভিজিৎ এখন জেলের বাইরে, সন্দীপ এখনও অন্য একটি মামলায় কারাবন্দি। বুধবার আদালতের শুনানিতেও সিবিআইয়ের এই চার্জশিটে দেরির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তোলা হয়। এতে তদন্তের গতি ও নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।