ডিজিটাল ডেস্ক, ৩ জুন : কলকাতার বাসিন্দা ওয়াজাহত খান, যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুনের আইন ছাত্রী ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি নিজেই নিখোঁজ বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা। গার্ডেনরিচ থানায় দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত শুক্রবার গুরুগ্রাম থেকে শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তবে শর্মিষ্ঠার গ্রেফতারের পর ওয়াজাহাতের বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি রাজ্যে এফআইআর দায়ের হয়েছে (Sharmistha Panoli Arrest Update)।
এর মধ্যে অসম সরকার তাঁকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওয়াজাহাতের পরিবারের দাবি, পানোলির গ্রেফতারির পর থেকেই তাঁদের হুমকি ফোন আসছে। এদিকে, ওয়াজাহাতের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগও উঠেছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে শ্রী রাম স্বাভিমান পরিষদ। এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কামাখ্যা দেবী-সহ বেশ কিছু হিন্দু দেবদেবীর অপমান করার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। অসম সরকার তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও দিল্লিতে ওয়াজাহত খানের বিরুদ্ধে হয় এফআইআর দায়ের হয়েছে, না হয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁর বাবা সাদাত খান জানিয়েছেন, ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে প্রচুর হুমকি ও অপমানজনক ফোন আসছিল। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বাবা। এদিকে, অসমের দিসপুর থেকে একটি পুলিশের দল পশ্চিমবঙ্গে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ঘটনার পর ওয়াজাহতের পরিবারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে। তবে পুলিশ এখনও তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত নয় এবং তদন্ত চলছে। এই পরিস্থিতিতে ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কলকাতার রশিদি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজাহত খান, যাঁর বিরুদ্ধে শ্রীরাম স্বাভিমান পরিষদ মঙ্গলবার একটি এফআইআর দায়ের করেছে। এই পরিষদটি একটি দাতব্য অছি সংগঠন। অভিযোগ অনুযায়ী, গার্ডেনরিচ থানায় ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াজাহত খান ইচ্ছাকৃতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক ও ঘৃণা প্রচার করতেন। তাঁর পোস্টের প্রধান লক্ষ্য ছিল হিন্দু সমাজ, তাদের ধর্মবিশ্বাস ও দেবতাদের প্রতি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কৃষ্ণ ও সনাতনী বেদ-পুরাণ নিয়ে অবমাননাকর ও যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া ভাষা ব্যবহার করতেন।
শ্রীরাম স্বাভিমান পরিষদ অবিলম্বে ওয়াজাহত খানের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ১৫০০ কিমি দূর থেকে যদি শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়, তাহলে গার্ডেনরিচের বাসিন্দাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে গ্রেফতার করা উচিত। অভিযোগে বলা হয়েছে, আইনের চোখে সকলেই সমান। এদিকে, ওয়াজাহতের বাবা সাদাত খান জানিয়েছেন, রবিবার রাতের পর থেকে তাঁর ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি দাবি করেছেন, ওয়াজাহত নির্দোষ ও ধর্মনিরপেক্ষ। তাঁর আশঙ্কা, ওয়াজাহতের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে।
তিনি আরও জানান, ওয়াজাহতের ফোন বন্ধ রয়েছে, তাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং ওয়াজাহতের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।