ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০ মে : গরমের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম পাহাড়। তবে এরই মধ্যে উত্তর সিকিমের চুংথাং-মুনসিথাং সড়কে ঘটে গেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বৃষ্টিতে পাহাড়ি রাস্তা ছিল পিচ্ছিল, আর সেই বিপজ্জনক পথেই পর্যটকবাহী একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে (Sikkim News)। চালকসহ মোট ১১ জন যাত্রী ছিলেন গাড়িটিতে। এখন পর্যন্ত মাত্র ২ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, আর বাকিদের সন্ধানে উদ্ধারকাজ জোরকদমে চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ ৯ পর্যটকের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে, প্রত্যাশা—তাঁদের দ্রুত নিরাপদে খুঁজে পাওয়া যাবে।
গুরুদোংমার থেকে গ্যাংটক ফেরার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয় পর্যটকবাহী গাড়িটি। চলার পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে গভীর খাদে পড়ে যায়। পর্যটকদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি, তবে সূত্রের খবর—তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বাসিন্দা। উদ্ধারকাজ চলছে, স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উত্তর সিকিমের চুংথাং-মুনশিথাং সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। পর্যটকবাহী গাড়ি SK 0J 650 বৃষ্টিভেজা পিচ্ছিল রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ১০০০ ফুট গভীরে তিস্তা নদীতে পড়ে যায়। মাঙ্গানের পুলিশ সুপার সোনম দেচচু জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটিতে ১১ জন যাত্রী ছিলেন। উদ্ধারকাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে, যেখানে পুলিশ, ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। জেলা প্রশাসনও উদ্ধার অভিযানে তৎপর রয়েছে। সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আহত ২ জন যাত্রী-কে উদ্ধার করে জরুরি চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তবে, অন্য ৯ জন এখনও নিখোঁজ, যাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। পরিস্থিতির উপর প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে, উদ্ধারকারীরা নিখোঁজদের সন্ধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিকিমে কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া অত্যন্ত প্রতিকূল। আকাশ মেঘলা, সঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বিমান বাগডোগরা বিমানবন্দরে অবতরণ করলেও, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তাঁর সিকিম সফর বাতিল করতে হয়। কিছুক্ষণ বিমানবন্দরে অপেক্ষার পর, আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়ায় সফর স্থগিত করা হয়। এরই মধ্যে সিকিমে ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা—বৃষ্টিভেজা রাস্তা দিয়ে চলার সময় পর্যটকবাহী গাড়িটি গভীর খাদে পড়ে যায়। পুলিশ তদন্ত করছে কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তবে এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগ নিখোঁজ যাত্রীদের নিয়ে। তাঁদের অবস্থার খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।
এই সময়টায় পর্যটকদের ভিড়ে সিকিম ব্যস্ত থাকে। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় আগেই বর্ষার আগমন ঘটেছে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে, যার ফলে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে, পাশাপাশি পাহাড়ে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহবিদরা। পরিস্থিতির কারণে গাড়িচালকদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে, পাশাপাশি পর্যটকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রাকৃতিক এই প্রতিকূলতার মাঝে নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।