SSC PC On Mamata Banerjee : মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় অসন্তুষ্ট মেহবুবরা, মুখ্যমন্ত্রীর নেতাজি ইনডোরে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মিথ্যে মনে করছেন
ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ মে : নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়োগ সংক্রান্ত ঘোষণা করলেও, ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা এতে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা মনে করছেন, এই ঘোষণায় তাঁদের উপেক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া, তাঁদের অভিযোগ, নেতাজি ইনডোরে মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা বাস্তবে মিথ্যে প্রমাণিত হচ্ছে। ফলে, তাঁরা নিজেদের ব্রাত্য বলে মনে করছেন (SSC PC On Mamata Banerjee)।
বেশ কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর প্রতিবাদী ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের অন্যতম মুখ মেহবুব মণ্ডল বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “৪ দিন হাসপাতালে ছিলাম। এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটেছে।” তাঁর মতে, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক। তিনি অভিযোগ করেন, “উনি বলেছিলেন যোগ্যদের চাকরি যেতে দেবেন না। অথচ গতকাল তাঁদের অন্য দফতরে নিয়োগের কথা বলেছেন। এর মানে, উনি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।” এছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী যে নতুন করে পরীক্ষায় বসার কথা বলেছেন, তাতেও আপত্তি জানিয়েছেন মেহবুব। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্ত যোগ্য চাকরিহারাদের প্রতি অবিচার।
‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মেহবুব মণ্ডল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—”এখনও সিলেবাস প্রকাশ করা হয়নি। এতকিছু মাথায় রেখে যারা পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে না, তাঁদের যদি কোনও প্রতিক্রিয়া হয়, তার দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা যারা যোগ্য, তাঁদের কান্নার আওয়াজ কানে গেল না। আমরা ব্রাত্য হয়ে গেলাম, অথচ অযোগ্যদের অন্য দফতরে নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে।” মেহবুব স্পষ্ট জানান, “আমরা এটা মানব না। আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।” তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র রিভিউ পিটিশনের দরজা খোলা রেখেছেন। এতে আদতে কোনও লাভ হবে কিনা, তা নিয়েই আমরা সংশয়ে রয়েছি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করে ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা অভিযোগ করেছেন—”তিনি দুর্নীতিবাজদেরও মুখ্যমন্ত্রী। যে দুর্নীতি হয়েছে, তার দায় তিনি এড়াতে পারেন না।” তাঁদের মতে, নবান্ন থেকে তিনি এক রাজনৈতিক ব্যক্তির মতোই ঘোষণা করেছেন। পরীক্ষার ঘোষণার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন—”যদি শেষমেশ সকলকে পরীক্ষা দিতেই হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে একাংশকে অন্য দফতরে সুযোগ দেওয়ার কথা বলছেন?” এছাড়া, তাঁদের অভিযোগ, আদালতও বিষয়টি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেনি। তাঁদের মতে, “আদালত দায়িত্ব পালন করেনি, আর রাজ্য সরকারই সেই সুযোগ করে দিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন যে আগামী ৩০ মে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ২৪,২০৩টি শূন্য পদ তৈরি হয়েছে, যেখানে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। তবে, এই ঘোষণার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মতে, এসএসসি একটি স্বশাসিত সংস্থা, এবং মুখ্যমন্ত্রী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-র মামলার বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছে। তাহলে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে ঘোষণা কীভাবে করতে পারেন?”—এই নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
Comments are closed.